চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল আলোচিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পে বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত আগ্রহী টার্মিনাল অপারেটররা তাদের প্রস্তাব জমা দিতে পারবেন। এরপর প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন শুরু হবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর প্রশাসন জানায়, দ্বিতীয় দফায় ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজর নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন, যা আগামী সপ্তাহেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা। পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ১২৪ একর অতিরিক্ত জমির অনুমোদন এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর আগে গত ২১ আগস্ট সরকার বে-টার্মিনালের জন্য ১৮৮ একর নতুন জমি বরাদ্দ দেয়, ফলে মোট জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৫৬ একরে। তবে বন বিভাগের অধীনে থাকা আরও ১২৪ একর জমি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এ প্রকল্পের অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে ঋণ চূড়ান্ত হওয়ার পর জুনে ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) অনুমোদন পায়। ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রাথমিক ধাপের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বে-টার্মিনালের ব্রেক ওয়াটার ও চ্যানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ বিশ্বব্যাংক মাত্র ০.৮৫ শতাংশ সুদে ঋণ হিসেবে দিচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ অনুমোদনের চার মাসের মধ্যে কার্যক্রম শুরু করতে হয়; এজন্যই দ্রুত প্রস্তাব আহ্বান বা আরএফপি প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে। সময়মতো এই ধাপ পেরোনো না গেলে পুনরায় অনুমোদনের জন্য বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে যেতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার অ্যান্ড মেরিন বিভাগের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ জানান, “ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজর নিয়োগের কাজ শেষ পর্যায়ে। বিশ্বব্যাংকও সময়সীমা ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে, যার মধ্যে আমরা প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে চাই।”
বন্দর ব্যবহারকারীরা মনে করছেন, অতীতে নানা কারণে এ প্রকল্প বারবার বিলম্বিত হয়েছে। তবে সম্প্রতি যে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে, তা ধরে রাখতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি; অন্যথায় বিদেশি বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ডিপিপি অনুসারে, চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে পতেঙ্গা উপকূলজুড়ে বে-টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩১ সাল। এতে অংশ নেবে সিঙ্গাপুরের পিএসএ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডসহ আরও একটি আন্তর্জাতিক অপারেটর।