বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নতুন নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে, যেখানে নির্বাচনী প্রচারে পোস্টার ব্যবহারের পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি, একটি আসনে প্রার্থী ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না, যা দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট ও প্রস্থে ৯ ফুট সীমাবদ্ধ থাকবে। নির্বাচনকালীন ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা অনুরূপ যন্ত্রের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নারীদের উপর সাইবার বুলিং রোধ, প্রবাসে কোনো প্রার্থীর পক্ষে সশরীরে প্রচারণা নিষেধ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিথ্যাচার বা অপপ্রচার চালালে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা এই আচরণবিধিতে সংযোজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ে সংশোধিত আচরণবিধি পেশ করেছে যা Representation of the People Order (RPO) সংশোধন প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রাথমিকভাবে, পোস্টার প্রচারণা থেকে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রচারের জন্য বিলবোর্ড নির্দিষ্ট মাত্রায় সীমাবদ্ধ করা হয়েছে যাতে নির্বাচনী পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও নিয়ন্ত্রিত থাকে। বিলবোর্ডের আকার ও সংখ্যায় এই বিধি প্রয়োগের ফলে প্রার্থীদের প্রচারণার নিয়ন্ত্রণসহ সুশৃঙ্খলা রক্ষা করা হবে বলে অভিমত।
এছাড়া, নির্বাচনী প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন বা কোয়াডকপ্টারের ব্যবহারও নিষিদ্ধ। ইসির পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত আচরণবিধিতে নারীদের সাইবার বুলিং প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য সশরীরে প্রচারণা নীতি কঠোর করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ব্যক্তিগত বা দলীয় উভয় মিথ্যা তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে শাস্তির বিধান তৈরির মাধ্যমে ডিজিটাল দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আদেশ ভঙ্গের ক্ষেত্রে জরিমানা বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ ১.৫ লাখ টাকা এবং ছ'মাসের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের বিধানসমূহ যেগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করেছিলো, সেগুলো অধিকাংশই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
নির্বাচনী আচরণবিধির এই পরিবর্তনগুলি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছে জানানো হয়েছে এবং এটি নির্বাচনী পরিবেশকে আরও স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত করার লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপ। এই নতুন নিয়মের ফলে নির্বাচনী প্রচারণার কায়দা পাল্টাবে এবং সমগ্র নির্বাচনী পরিবেশে উন্নয়ন ঘটাতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।