৩১ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুম্বাই চলচ্চিত্র জগতের এই জনপ্রিয় শিল্পীর অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের উর্দু ও হিন্দিভাষী আলেম-ওলামারা এ আয়োজনের বিরোধিতা করেন। মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের কলকাতা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত জিল্লুর রহমান আরিফ এবং ইমামে ইদাইন কারি ফজলুর রহমান এই দাবি উত্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
পশ্চিমবঙ্গ জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানান, জাভেদ আখতার বড় শিল্পী হলেও ইসলামি শরিয়া ও আল্লাহকে ব্যঙ্গ করার অভিযোগে তাঁর অনুষ্ঠান গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, “উর্দু একাডেমি সরকারি সংস্থা এবং উর্দু ভাষার সঙ্গে মুসলিম সমাজের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ৯৫ শতাংশ উর্দুভাষী মুসলিমদের ভাবাবেগে আঘাত করার অধিকার কারও নেই।”
তিনি আরও দাবি করেন, এ বিষয়ে একাডেমির ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্যসভার এমপি নাদিমুল হককে অনুরোধ করা হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে অনুষ্ঠান বাতিল হয়।
ঘটনাটি নিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক বিতর্কও ছড়িয়েছে। মুসলিম সমাজের একাংশ মনে করছে, অনুষ্ঠান অনুমোদন দেওয়া উচিত ছিল। অন্যদিকে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী অভিযোগ করেছে, মমতার আমলে উগ্র ইসলামপন্থীরা সংস্কৃতি ও ভাষার অঙ্গনকে নিয়ন্ত্রণ করছে। বিজেপি-সমর্থক পঙ্কজ চৌধুরী বলেছেন, “তসলিমা নাসরিনকে সিপিআইএম আমলে যেভাবে রাজ্য ছাড়তে হয়েছিল, এবার মমতার আমলে জাভেদ আখতারকে ঢুকতে দেওয়া হলো না।”
জাভেদ আখতার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “হিন্দু সমাজের একাংশ আমাকে উগ্র মুসলমান ভেবে পাকিস্তানে যেতে বলে, আবার মুসলমান সমাজের একাংশ আমাকে ইসলামবিরোধী ভেবে হিন্দু নাম নিতে বলে। মনে হয়, সম্ভবত আমার চিন্তাভাবনাই সঠিক পথে আছে।”
পশ্চিমবঙ্গ উর্দু একাডেমি অনুষ্ঠানটির নতুন তারিখ ঘোষণা করবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।