প্রায় ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ দিন পর নির্বাচনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। প্রার্থীর সংখ্যাও এবার রেকর্ড পরিমাণ। তবে এত বিপুল সংখ্যক প্রার্থী ও ভোটারের ভিড়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদে লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। পাশাপাশি ১৮টি হল সংসদের ১৩টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মোট কেন্দ্র রাখা হয়েছে মাত্র ৮টি এবং বুথ ৭১০টি। গড় হিসেবে প্রতি কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার, আর প্রতি বুথে ৫৬ জন। বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী, ভোটার যদি কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের সব ৪১ পদে ব্যালট দেন, তাহলে সময় লাগতে পারে প্রায় ৮ মিনিট। অর্থাৎ নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রতি ১২ সেকেন্ডে একজন শিক্ষার্থীকে ভোট দিতে হবে, যা বাস্তবে সম্ভব কিনা তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।
বেশ কয়েকটি প্যানেল শুরু থেকেই ভোটকেন্দ্র সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে আসছিল। তবে কমিশন বুথ বাড়ালেও কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ায়নি, যা নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রার্থীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেন, সচেতনভাবেই কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে না, যা আগের নির্বাচনের মতো বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা জাগাচ্ছে। অন্যদিকে শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম মনে করেন, শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে এবং ভোট দিতে পারবে কিনা, সে বিষয়েই সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ কমানোর চেষ্টা করে বলেন, সাধারণত ভোটাররা আগে থেকেই পছন্দের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর চিহ্নিত করে রাখেন। তাই ভোটের সময় বিলম্ব হওয়ার কথা নয়।
উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।