মক্কার বুকে তীব্র খরার সময়ে মানুষ ও গবাদি পশুর জীবন চরম বিপদের মুখে পড়েছিল। খাদ্য ও পানির অভাবে দিশেহারা কোরাইশ নেতারা শেষ ভরসা হিসেবে আবু তালিবের কাছে আসেন। তাঁদের অনুরোধ—আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে হবে।
তখন কিশোর বয়সী মুহাম্মদ (সা.)-কে সঙ্গে নিয়ে আবু তালিব কাবার সামনে দাঁড়ান। চাচার হাত ধরে নবীজি (সা.) কাবার দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁর উজ্জ্বল মুখমণ্ডল যেন চাঁদের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছিল চারপাশে। তখন আকাশ ছিল একেবারে পরিষ্কার। কিন্তু দোয়া শেষ হতেই আকাশে ঘন মেঘ জমে যায় এবং প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কয়েক দিন টানা বৃষ্টি চলতে থাকে, যার ফলে শুকনো মরুভূমি সবুজে ভরে ওঠে।
এই অলৌকিক ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন মক্কার অধিবাসীরা। তাঁদের চোখের সামনে এক কিশোরের দোয়ায় খরা-বিধ্বস্ত ভূমি পরিণত হলো প্রাণবন্ত সবুজে।
বৃষ্টির পর আবু তালিব আবেগভরে কিছু অমর কবিতা রচনা করেন। এর একটি বিখ্যাত পঙক্তি হলো:
“ওয়াবইয়াদ ইউস্তাসকাল গামামু বিওয়াজহিহি, সিমালুল ইয়াতামা ইসমাতুল লি আর-রামিলি।”
অর্থাৎ— “যাঁর উজ্জ্বল মুখমণ্ডলের বরকতে মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরে, তিনি ইয়াতিমদের আশ্রয় ও বিধবাদের রক্ষক।”
ইসলামী ঐতিহাসিক গ্রন্থগুলোতে এ ঘটনাকে নবুয়তের প্রথম নিদর্শনগুলোর অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, আল্লাহ তাআলা কিশোর বয়স থেকেই নবীজি (সা.)-কে মানুষের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: তারিখু দিমাশক (১৫ খণ্ড), মুখতাসারুস সিরাহ (পৃ. ১৫ ও ৬), ইবনে কাসির (২ খণ্ড, পৃ. ৩৪৫)।