বাংলাদেশের খুচরা বাজারে সব ধরনের ডালের দাম একযোগে বেড়েছে। গত এক মাস ধরে দেশি মসুর, ছোলা ও অ্যাংকর ডাল কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, বড় পাইকাররা রমজানের আগে থেকেই কৌশল করে দাম বাড়াচ্ছেন যাতে পরে নজর এড়িয়ে যাওয়া যায়। তবে আমদানিকারকদের দাবি, এই মূল্যবৃদ্ধি মূলত আন্তর্জাতিক বাজারের ঘাটতির কারণে, যার সঙ্গে রমজানের সম্পর্ক নেই।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মসুরের কেজি ১৫৫–১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা মাসখানেক আগে ছিল ১৪০–১৪৫ টাকা। অন্যদিকে আমদানি করা বড় দানার মসুরের দাম তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে (৯৫–১১০ টাকা)। ছোলার দামও কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০–১১৫ টাকায়। এর ফলে ছোলার ডালের কেজি দাঁড়িয়েছে ১২৫–১৩০ টাকায়। অ্যাংকর ডাল আগের ৬০–৬৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ টাকায়। মুগ ডালের দাম প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এক মাসে দেশি মসুরের দাম ২ শতাংশ এবং ছোলার দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। বাজার ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানের আগে মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো হলে সাধারণত তা ততটা আলোচিত হয় না।
আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, দেশের উৎপাদন সর্বোচ্চ দুই মাসের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। বাকি সময় বিদেশ থেকে ডাল আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আগে ভারত, সিরিয়া ও তুরস্ক থেকে ডাল আমদানি হলেও বর্তমানে সরবরাহ আসে প্রধানত অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে। সংকটকালীন সময়ে কিছু ডাল মিয়ানমার থেকেও আসে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মানুষের প্রতিদিনের গড় চাহিদা প্রায় ৪৫ গ্রাম। বছরে সব ধরনের ডালের মোট চাহিদা দাঁড়ায় ২৬ থেকে ২৭ লাখ টন। এর বিপরীতে স্থানীয় উৎপাদন গড়ে ১০ লাখ টন। ফলে প্রতিবছর প্রায় ৬০ শতাংশ ঘাটতি পূরণে ১৭ লাখ টনের মতো ডাল আমদানি করতে হয়।