ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল পিন্টো জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ এবং সম্পূর্ণ অনৈতিক’ সামরিক হুমকি তৈরি করছে, যার উদ্দেশ্য ভেনেজুয়েলার বিশাল তেল ও গ্যাস সম্পদ দখল করা।
শুক্রবার নিউইয়র্কে দেওয়া বক্তব্যে পিন্টো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এমন পরিকল্পনা কেবল তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনই নয়, বরং পুরো ক্যারিবিয়ান ও দক্ষিণ আমেরিকাকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, যেন এই হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নেওয়া হয়।
এ সময় ভেনেজুয়েলার মন্ত্রী অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ‘ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা’ ব্যবহার করে বহু-বিলিয়ন ডলারের সামরিক কার্যক্রমকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র মূলত ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নিতে চায়।
এর আগে এনবিসি নিউজের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা ভেনেজুয়েলায় মাদক চোরাচালানকারীদের টার্গেট করতে বিমান হামলার পরিকল্পনা করছেন। দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি এমন হামলার কথা উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী মাদকবিরোধী অভিযানে ইতোমধ্যে কয়েকটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যাতে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন—আন্তর্জাতিক জলসীমায় এ ধরনের হামলার বৈধতা নিয়ে। একই সঙ্গে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন সরবরাহের প্রধান উৎস নয়।
পিন্টো জানান, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে নিহতরা প্রকৃতপক্ষে অপরাধী ছিলেন না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা চালু করার দাবি জানানো হবে।
ওদিকে, ওয়াশিংটন বলছে তারা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। এর অংশ হিসেবে আটটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন এবং পুয়ের্তো রিকোতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স