কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠী সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং দায়ী আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় টাউনহলে আয়োজন করা এ কর্মসূচিতে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নিহত সুমাইয়ার ভাই সাইফুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সমাজ ও প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিতে চান যে হত্যার এই ঘটনা বিস্মৃত হয়নি। সুমাইয়ার সহপাঠীরা জানান, তিন বছরের ক্লাস ও পরীক্ষা একসাথে করার স্মৃতি এখন বেদনাদায়ক শূন্যতায় পরিণত হয়েছে, যা তাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। তারা স্পষ্ট বার্তা দেন যে দ্রুত জবাবদিহি না পেলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মন্দিরা দাস অভিযোগ করেন, দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। পুলিশ আশ্বাস দিলেও নির্দিষ্ট সময়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় তাদের হতাশা বেড়েছে। তিনি বলেন, “আমরা ন্যায়বিচার চাই, প্রতিশ্রুতি নয়।” একই বিভাগের হাসান অন্তর বলেন, তদন্তে আসামি মোবারক হোসেন ছাড়াও অন্য কেউ জড়িত কিনা—সে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা এখনও পরিষ্কার বার্তা পাননি। তাদের দাবি, তদন্ত দ্রুত শেষ করে নিরপেক্ষভাবে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নিহত সুমাইয়ার ভাই সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, প্রধান আসামি মোবারক হোসেন পূর্বেও অপরাধে জড়িত ছিলেন এবং ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন, কিন্তু তবু জামিনে মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তিনি জানতে চান কেন আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সাইফুল প্রশ্ন তোলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেলেও আসামি কোথায় গিয়েছিল এবং কী নিয়ে ফিরে এসেছিল তা এখনও প্রকাশ হয়নি। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের পনেরো দিন পরেও পোস্টমর্টেম ও ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা শহরের কালিয়াজুরী এলাকার একটি ভাড়া বাসায় সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কবিরাজ মোবারক হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়ে জানায়, সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।