মিলানে হঠাৎ করে সহিংস রূপ নেয় পরিস্থিতি। বিক্ষোভকারীরা যখন সেন্ট্রাল স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করে, তখন পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। একদল কালো পোশাক পরা বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে পাথর, স্মোক বোমা ও ধাতব বস্তু ছুঁড়ে মারে। একই সময়ে রোমের টারমিনি স্টেশনে প্রায় ২০ হাজার বিক্ষোভকারী সমবেত হন। বোলোনিয়া শহরেও বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই ধর্মঘটের কারণে ইতালিজুড়ে গণপরিবহন ও বন্দরের কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তিনি মিলানের ঘটনাকে 'লজ্জাজনক' বলে অভিহিত করে বলেন, এই সহিংসতা গাজার মানুষের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনবে না। তবে গাজা ইস্যুতে তার সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ার কারণে নিজ দেশে মেলোনি সমালোচনার শিকার হচ্ছেন। ইতালির ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা এলি শ্লেইন অভিযোগ করেছেন, যখন যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছিল, তখন মেলোনি সরকার এই বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
এদিকে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইস্যুতে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে গভীর বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল ও কানাডার পর ফ্রান্সও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই পদক্ষেপকে 'শান্তি প্রক্রিয়ার সূচনা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে বেলজিয়াম ও মাল্টার মতো দেশগুলো সমর্থন জানালেও, জি-৭ এর প্রভাবশালী সদস্য ইতালি এবং জার্মানি এই পথ থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে। জার্মানি ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সমালোচনা করেছে, তবে তারা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি এখনও আলোচনার টেবিলে নেই।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের এই পদক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসরায়েল এটিকে 'হামাসের জন্য পুরস্কার' বলে কটাক্ষ করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়েছেন, জর্ডান নদীর পশ্চিমে কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র হবে না। এর বিপরীতে, ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, এই স্বীকৃতি হামাসকে 'সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান' করার শামিল এবং এটি ফ্রান্সের জন্য একটি 'বড় কূটনৈতিক বিজয়'।