নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আইফোন কেনার টাকার জন্য মাহিয়া আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রী নিজের অপহরণ ও ধর্ষণের নাটক সাজিয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাহিয়ার দুই সহপাঠী সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে রূপগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মুড়াপাড়া সরকারি কলেজের ওই ছাত্রীকে অপহরণ ও গণধর্ষণের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি আমলে নিয়ে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে উঠে আসে, মাহিয়া আক্তার দীর্ঘদিন ধরেই একটি আইফোন কেনার জন্য পরিবারকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। পরিবার টাকা না দেওয়ায় মাহিয়া পরিকল্পনা করেন নিজের অপহরণ এবং ধর্ষণের নাটক সাজানোর। এই পরিকল্পনায় তাকে সহায়তা করে তার দুই সহপাঠী—সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২২ জুলাই সকালে মাহিয়া কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। পরে সিফাত অপহরণকারীর ছদ্মবেশে মাহিয়ার মাকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং হুমকি দেয়—টাকা না দিলে মাহিয়াকে ধর্ষণ করা হবে।
পরদিন, ২৩ জুলাই মাহিয়া বান্ধবী সিনথিয়ার বাসায় অবস্থান করেন এবং নাটকের অংশ হিসেবে অচেতন হওয়ার ভান করেন। তুসকা সিরাপ খেয়ে নিজেকে অজ্ঞান দেখিয়ে কলেজের পেছনে পড়ে থাকেন। পরে সিফাত মাহিয়ার মাকে ফোন করে জানায়, টাকা না পেয়ে মেয়েকে ফেলে গেছে। এই ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ মাহিয়াকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তদন্তে বেরিয়ে আসে পুরো ঘটনার মূল রহস্য।
ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাহিয়া আক্তারসহ তার দুই সহপাঠীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।