ফরিদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। হ্যাপি বেগম (৩৫) নামের এক নারী রোগীর পাইলসের অস্ত্রোপচারের পরিবর্তে ভুলবশত পিত্তথলির অপারেশন করা হয়। এতে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে সিভিল সার্জন, বিএমএ নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা হাসপাতালে পৌঁছে ঘটনার সত্যতা পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে, ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার শাহ সূফি সড়কের সৌদি-বাংলা প্রাইভেট হাসপাতালে। ভুক্তভোগী হ্যাপি বেগম সদরপুর উপজেলার আসলাম হোসেনের স্ত্রী।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, দুপুরে পাইলসের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হলেও সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসক মো. নজরুল ইসলাম ভুল করে তাঁর পিত্তথলির অস্ত্রোপচার করেন। বিষয়টি টের পেয়ে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালের কর্মীরা পালিয়ে যান। তিন ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রোগী কোনো চিকিৎসা না পাওয়ায় স্বজনরা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের খবর দেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান এবং বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আলি আকবর হাওলাদার হাসপাতালে গিয়ে রোগীর শারীরিক পরীক্ষা করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রোগীর মেয়ে অভিযোগ করেন, হাসপাতালে ভর্তি আরেকজন রোগীর পিত্তথলিতে পাথর ছিল, অথচ তার বদলে ভুলবশত তাঁর মায়ের অপারেশন করা হয়েছে। কোনো নথিপত্র যাচাই না করেই অস্ত্রোপচার করার কারণে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি দাবি করেন।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা হাসপাতালটির স্থায়ীভাবে বন্ধ ও চিকিৎসকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সিভিল সার্জন ডা. মাহামুদুল হাসান বলেন, চিকিৎসকের অবহেলার কারণে ভুল অস্ত্রোপচার হয়েছে। এ কারণে হাসপাতালটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই ভর্তি থাকা রোগীদের ফরিদপুর সদর হাসপাতাল ও ডায়াবেটিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ফরিদপুরে প্রাইভেট হাসপাতালে পাইলস রোগীর পিত্তথলি অপারেশন, হাসপাতাল সিলগালা

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ