আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজারো মানুষের মৃত্যু ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মধ্যেই শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠাচ্ছে পাকিস্তান। জাতিসংঘ এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বহিষ্কার কার্যক্রম স্থগিত করার আহ্বান জানালেও ইসলামাবাদ সময়সীমা শেষ হওয়ার অজুহাতে অভিযান আরও জোরদার করেছে।
গত সপ্তাহে কুনার প্রদেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে, বহু গ্রাম কার্যত মানচিত্র থেকে মুছে গেছে। তালেবান সরকারের হিসাবে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ২ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে, আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। এখনও উদ্ধার তৎপরতা চলমান এবং আফটারশক আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সতর্ক করে বলেন, যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে তারা আসলে একটি ‘বিপর্যস্ত অঞ্চলে’ ফিরে যাচ্ছে। তিনি পাকিস্তান সরকারকে অনুরোধ জানান অন্তত বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ফেরত পাঠানো স্থগিত করতে। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের এ অনুরোধ মানছে না।
টোলো নিউজ জানিয়েছে, ৩১ আগস্ট ছিল আফগান অভিবাসীদের দেশে ফেরার নির্ধারিত সময়সীমা। এরপর থেকে চমন ও তোরখাম সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আফগানিস্তানে প্রবেশ করছে। অনেকের অভিযোগ, হঠাৎ বহিষ্কার শুরু হওয়ায় চার দশক ধরে পাকিস্তানে ব্যবসা ও বসবাস করা পরিবারগুলো চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান অভিবাসীরা বলছেন, ভিসা নবায়ন বন্ধ হওয়ায় বৈধ কাগজপত্রধারীরাও সমস্যায় পড়ছেন। তারা ধীরে ধীরে ও নিরাপদে প্রত্যাবাসনের দাবি জানালেও ফেরত পাঠানোর গতি আরও বেড়েছে।
পাকিস্তান ১৯৮০-এর দশক থেকে আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। তবে সীমান্তে সন্ত্রাসী হামলা ও নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে ২০২৩ সাল থেকে অভিবাসনবিরোধী অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, গত এক বছরে ৪ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি আফগানকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সাম্প্রতিক অভিযানে আরও প্রায় ১৩ লাখ নিবন্ধিত শরণার্থী ঝুঁকির মুখে পড়েছেন।