চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় ইসলামে খাস সালাত (খাস নামাজ) আদায় করা সুন্নত। এটি আল্লাহর শক্তি ও মহিমা স্মরণে বিশেষ ইবাদত হিসেবে পালন করা হয়।
১. নামাজের নাম:
- চন্দ্রগ্রহণের নামাজ: সালাতুল খুসুফ
- সূর্যগ্রহণের নামাজ: সালাতুল কুসুফ
হাদিস অনুযায়ী, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন:
"চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণের সময় নামাজ পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা মানুষকে আল্লাহর দিকে মনোযোগী করে।"
—সহিহ মুসলিম
২. নামাজের সময়:
- নামাজের শুরু হয় গ্রহণের শুরু থেকে পূর্ণগ্রহণ পর্যন্ত।
- কেউ যদি রাতের শেষ অংশেও নামাজ পড়তে চায়, তা সুন্নত এবং গ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত আদায় করা যায়।
৩. নামাজের সংখ্যা ও রাকাত:
- এটি ২ রাকাতের নামাজ, কিন্তু প্রতিটি রাকাতে দীর্ঘ ক্বিরাত ও রুকু থাকে।
- অর্থাৎ, সাধারণ নামাজের তুলনায় বেশি সময় ধরে আল্লাহর কসমা পাঠ করা হয়।
৪. নামাজের ধরন ও নিয়ম:
> প্রথম রাকাত:
- কিয়াম: দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় আল্লাহর নাম পাঠ করা (দীর্ঘ ক্বিরাত)।
- রুকু: দীর্ঘ সময় রুকু করা এবং আল্লাহর প্রশংসা করা।
- সিজদা: সাধারিত নামাজের মতো সিজদা।
> দ্বিতীয় রাকাত:
- একইভাবে দীর্ঘ ক্বিরাত ও রুকু।
- নামাজ শেষে তাকবীর দিয়ে সালাম দিয়ে নামাজ শেষ করা।
৫. নামাজ শেষে করণীয়:
- আল্লাহর কাছে দুআ ও তওবা করা।
- গুনাহের ক্ষমা চাওয়া ও প্রার্থনা করা।
- পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই মুহূর্ত ভাগাভাগি করা এবং শিশুদেরও এই ইবাদতে পরিচিত করা।
৬. বিশেষ বিষয়:
- চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণকে ভয় বা শাস্তি হিসেবে দেখা উচিত নয়।
- এটি আল্লাহর সৃষ্টি ও শক্তির নিদর্শন, যা মানুষকে স্মরণ করায়।
নবী করিম (সাঃ) বলেছেন:
"চন্দ্রগ্রহণ কারো জন্ম বা মৃত্যুর কারণে ঘটে না, এটি আল্লাহর স্মরণের একটি সুযোগ।"
—সহিহ মুসলিম
চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময় খাস নামাজ আদায় করা মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। দীর্ঘ ক্বিরাত ও রুকুর মাধ্যমে আল্লাহর মহিমা স্মরণ করা হয়, দোয়া ও তওবার মাধ্যমে আত্মা পরিশুদ্ধ হয়। এই নামাজ শিশু, তরুণ ও প্রবীণ সবাইকে আল্লাহর স্মরণের প্রতি সচেতন করে এবং মহাজাগতিক ঘটনার প্রতি ইবাদতের দৃষ্টিভঙ্গি শেখায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই নেক আমল পালনের তাওফিক দান করুন, যাতে আমরা সবসময় তাঁর সন্তুষ্টি ও রহমতের দিকে মনোনিবেশ করতে পারি ইন শা আল্লাহ।