সিঙ্গাপুর সরকার অনলাইনে সরকারি কর্মকর্তাদের ছদ্মবেশে প্রতারণা রোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম মেটাকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটিতে এ ধরনের প্রতারণা ক্রমেই বাড়ছে এবং এতে ভুক্তভোগীরা কয়েক কোটি ডলার হারিয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানা যায়, সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী গোহ পেই মিং জানিয়েছেন, ফেসবুক সরকারি কর্মকর্তা সেজে প্রতারণার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্ম। তিনি সতর্ক করে বলেন, মেটা যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তবে এক মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।
একটি এন্টি-স্ক্যাম সম্মেলনে বক্তৃতাকালে গোহ জানান, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনা আগের বছরের তুলনায় ২০০ শতাংশ বেড়েছে এবং সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৬০টিরও বেশি। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, এ বছর প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়ং-এর ডিপফেক ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ প্রকল্প প্রচার করেছে প্রতারকরা। শুধু ২০২৫ সালের প্রথমার্ধেই এসব প্রতারণায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২৬ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলারে দাঁড়িয়েছে।
গোহ জানান, পুলিশ মেটাকে বাধ্য করবে যাতে তারা স্ক্যাম বিজ্ঞাপন, ভুয়া অ্যাকাউন্ট, প্রোফাইল এবং সরকারি কর্মকর্তাদের পরিচয়ে তৈরি ব্যবসায়িক পেজ বন্ধে উদ্যোগ নেয়। এটিই প্রথমবারের মতো কোনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে সরাসরি প্রতারণা মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করছে সিঙ্গাপুর।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর প্রতারকদের কাছে আকর্ষণীয় লক্ষ্যবস্তু, কারণ এখানে প্রাপ্তবয়স্কদের গড় সম্পদ বৈশ্বিক মানদণ্ডের তুলনায় বেশি এবং দেশটি ইন্টারনেট সংযোগে অগ্রসর। সরকারি কর্মকর্তাদের পরিচয় ব্যবহার করাকে প্রতারকরা সুবিধাজনক মনে করে, কারণ জনগণের সরকারের প্রতি আস্থা অনেক বেশি।
এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে টিকটককেও ‘ডেসিগনেটেড অনলাইন সার্ভিস’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্ল্যাটফর্মটিকে প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যদিকে, মালয়েশিয়া ফেক নিউজ মোকাবেলায় সহযোগিতায় বিলম্ব করায় টিকটকের শীর্ষ কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে।