পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে চলতি সপ্তাহে টানা ভারি বর্ষণ ও উজানের পানি নামার ফলে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে কমপক্ষে ৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ইতিমধ্যে প্রাদেশিক প্রশাসন উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং ৭ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। রোববার (৩১ আগস্ট) পাঞ্জাব প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, ২৬ জুন থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ দেশজুড়ে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে। এ সময় সারা দেশে অন্তত ৮৩১ জন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন ১,১২১ জন। এর মধ্যে শুধু পাঞ্জাবেই প্রাণ হারিয়েছেন ১৯১ জন, যা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া (৪৮০ জন নিহত)-এর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে সিন্ধুতে ৫৮ জন, গিলগিট-বালতিস্তানে ৪১ জন, আজাদ কাশ্মীরে ২৯ জন, বেলুচিস্তানে ২৪ জন এবং রাজধানী ইসলামাবাদে ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে কারণ চেনাব, রবি ও শতদ্রু—এই তিনটি নদীর পানি একযোগে বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছেছে। কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের ইতিহাসে এ প্রথমবার তিনটি প্রধান নদী একসঙ্গে ‘সুপার ফ্লাড’ পরিস্থিতিতে রয়েছে। প্রাদেশিক পিডিএমএ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রদেশের কমপক্ষে ২,২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬৪ জন মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে এবং প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি গবাদি পশুকে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রদেশের প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।