বাংলাদেশে অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফির বিস্তার সামাজিক ও আর্থিক সংকট তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে সরকার। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত মানুষের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে। এতে অনেকেই সর্বস্ব হারিয়ে অপরাধ ও সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে টেক জায়ান্ট ফেসবুক, টিকটক ও গুগলকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গত ৩ নভেম্বর পাঠানো ওই চিঠিতে সরকার জানায়, এসব কার্যক্রম পারিবারিক বিরোধ, আত্মহত্যা ও অর্থনৈতিক ক্ষতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে প্রচলিত আইনে অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি উভয়ই নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই প্ল্যাটফর্মগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, “বিটিআরসি থেকে টেক কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের ই-মেইল করা হয়েছে, ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।”
একইসঙ্গে মোবাইল অপারেটর ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইন জুয়া সংশ্লিষ্ট লেনদেন বন্ধে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রবির করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক শাহ মো. ফজলে খুদা জানান, এনটিএমসি’র মাধ্যমে জুয়ার সাইটগুলো নিয়মিতভাবে ব্লক করা হচ্ছে। উপায়-এর করপোরেট অ্যাফেয়ার্স প্রধান মোহাম্মদ সামসুজ্জোহা বলেন, এসব সাইটের ডেটা অ্যাক্সেস বন্ধের পাশাপাশি বিকল্প লেনদেন চ্যানেলগুলোকেও নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে হবে।
সম্প্রতি বিটিআরসির এক বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তাব করেছে, অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মতো একটি স্বতন্ত্র সংস্থা গঠন করা উচিত।
সরকারের মতে, অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফির বিস্তার শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, তরুণ প্রজন্মের মানসিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এই কার্যক্রম দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।
ডেস্ক রিপোর্ট