এ সময় নদীতে বিলীন হয় অন্তত ১০টি স্থাপনা। আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। আর ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ডাম্পিং শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রবল স্রোত ও বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ডাম্পিংয়ের কাজ।
শরীয়তপুরের জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট এলাকায় বসবাস করেন তাজুল মাদবর। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তার দুইটি বসতঘর। নদীর পাড়ে হওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে তাড়াহুড়া করে সরিয়েছেন নিজের ও ভাইদের বসতবাড়ি।
তাজুল মাদবরের বলেন, হঠাত্ বিকট শব্দ শুনে নদীর পাড়ে আসি, এসে দেখি নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। চোখের সামনেই আমার দুটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরকারের কাছে আমার দাবি, এখানে যেন টেকসই একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে দেয়।
তার মতো একই অবস্থা রানা মাদবরের। নদীভাঙনে একটি বসতঘর ও কাচারিঘর নদীতে ধসে গেছে। তিনি বলেন, আমার বড় একটা ঘর এবং একটি কাচারিঘর ছিল বৃহস্পতিবার ভোরে নদীতে তলিয়ে গেছে। পদ্মা নদী আমাদের বসতঘরটুকু নিয়ে গেল।
এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার রিংকু মাদবর, ইমরান মাদবরসহ ১০টি বসতঘর নদীতে ধসে গেছে। ২৬টি বসতঘর সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয়রা। এর আগেও ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন জাজিরার মাঝিরঘাটের অনেক পরিবার। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দাবি স্থায়ী একটি বেড়িবাঁধের।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০-১১ সালে পদ্মা সেতু থেকে জাজিরা মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাঁধটি তৈরি করতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ডাম্পিং শুরু করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত ভাঙন রোধ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত জিও ডাম্পিং চলবে। আর স্থায়ীভাবে ভাঙন ঠেকাতে আগামী বর্ষার আগেই স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে।
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, আমরা ভাঙনকবলিত এলাকায় যাব। সেখানে যে পরিবারগুলো ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করে সহযোগিতা করব। এর আগেও তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হয়েছিল। আর যারা জমি, বসতঘরসহ সব হারিয়েছেন তাদের জন্য ঘর ও জমি দেওয়া যায় কি না, তার চিন্তা করা হচ্ছে।