আফগানিস্তানের মাটি যদি পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ব্যবহার করা হয়, তাহলে ইসলামাবাদ ‘আফগানিস্তানের গভীরে’ অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি সতর্ক করে বলেন, সীমান্ত থেকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত থাকলে পাকিস্তান কেবল আত্মরক্ষার্থেই নয়, প্রয়োজন হলে আফগান ভূখণ্ডে গেলেও পিছপা হবে না—এমন অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত হিসেবে জানানো হয়, সম্প্রতি সীমান্ত সংঘাত শেষ করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আফগান ও পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের মধ্যে তিনদিন ব্যাপী আলোচনা হয়েছে; কিন্তু বৈঠক শেষে কার্যকর কোনও সমাধান বহাল রাখতে পারেনি দুইপক্ষ। পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, আফগান শাসকগোষ্ঠী তালেবান তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে দমনে সহযোগিতা করেনি এবং তাদের ভূখণ্ড প্রতিহিংসার কাজে ব্যবহার হতে দিচ্ছে।
পার্লামেন্টভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খাজা আসিফ আরও বলেন, “আমরা হামলা করবো, অবশ্যই করবো—যদি তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করা হয় এবং তারা আমাদের সীমান্ত লঙ্ঘন করে। আফগানিস্তানের গভীরে যেতে যদি আমাদের যেতে হয়, আমরা যাব।” একই সঙ্গে তিনি তালেবান নেতাদের উদ্দেশ্যে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের ভূখণ্ডে যে কোনও আত্মঘাতী হামলা বা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য তালেবানকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তান বহুদিন ধরেই নানা ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা ও অবহেলা সহ্য করেছে; এখন আর ওই ধৈর্য থাকবে না। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, তালেবান শাসন ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে নানাভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে এবং দুর্বলতা ঢাকতেই সংঘাত উস্কে দিচ্ছে। আশেপাশের দেশ ও বন্ধুসুলভ রাষ্ট্রের আবেদনমতো পাকিস্তান আলোচনায় অংশ নিয়েছে—কিন্তু কিছু আফগান কর্মকর্তার প্রদত্ত বক্তব্য কৌশলে বিভক্ত এবং বিদ্বেষপ্রবণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সীমান্ত গোড়ায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘকালীন উদ্বেগ থাকার প্রেক্ষিতে এই ধরণের ঘোষণাগুলো দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। সংলাপ এবং বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক চেষ্টার ওপর নির্ভর করেই এ ধরনের বিশৃঙ্খলার স্থায়ী সমাধান সম্ভব—বিশেষজ্ঞরা বলছেন—নাহলে সীমান্তীয় অভিযানের হুঁশিয়ারি বাস্তব রূপ পালে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মানবিক সমস্যাও বাড়তে পারে। (সূত্র: ডন)
ডেস্ক রিপোর্ট