সূত্র জানায়, প্রশাসন ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে মাদক কারখানাকে নিশানা করার পরিকল্পনা গ্রহণের কথা ভাবছে; তবে কূটনৈতিক চ্যানেল পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইউরোপ থেকে এক আধুনিক বিমানবাহী স্ট্রাইক গ্রুপ ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং ওই এলাকায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্টের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে এবং সরকারি পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন চলছে—তবে এখন প্রধান ফোকাস মাদকের আস্তানায় লক্ষ্যবস্তু হামলার দিকেই।
মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মার্কিন নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে; হেগসেথের তথ্যে সাম্প্রতিক এক হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং গত মাসে অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে মোট ১০টি নৌযানে হামলা চালিয়ে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। কিছু কর্মকর্তার বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরোকে মাদকচর্চার সঙ্গে জড়িত হিসেবে প্রমাণ করে তাকে বিচলিত করার কৌশলও বিবেচনা করছে—তাতে রাজনৈতিক চাপ তৈরি হতে পারে।
এদিকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রকাশিত তথ্যভাণ্ডারে ভেনেজুয়েলার অবস্থান স্পষ্ট—জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত দপ্তর (UNODC) ও যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (DEA)-র প্রতিবেদন অনুযায়ী কোকা গাছের প্রধান চাষাভূমি কলম্বিয়া, পেরু ও বলিভিয়া; ভেনেজুয়েলা কোকেন উৎপাদনকারী মূল দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত নয়। তবু প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ভেনেজুয়েলার মধ্য দিয়ে কিছু মাদকপন্যা পাচার হয় এবং ২০২০ সালে একটি ফেডারেল বিচারালয় নিকোলাস মাদুরোকে নারকো-সন্ত্রাস ও কোকেন আমদানির ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত করেছে—এই প্রেক্ষাপট থেকেই কৌশলগত আলোচনা চলছে।
শাসন পরিবর্তন লক্ষ্য করে কিছু আমেরিকান কর্মকর্তা মাদকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলে তাতে মাদুরো দুর্বল হতে পারে বলে মনে করেন। তথাপি সরকারিভাবে বড় ধরনের স্থল অভিযান চালাতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদন বা অন্তত কংগ্রেসকে জানানোর প্রয়োজন হতে পারে—এই সীমারেখা কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন। ট্রাম্প নিজে বলেছে, তিনি হয়তো আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা চাইবেন না, কিন্তু সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে সক্ষম হবেন এবং প্রয়োজনে কংগ্রেসকে জানাবেন।
পেন্টাগন বলছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে USS Gerald R. Ford স্ট্রাইক গ্রুপসহ বিমানযান মোতায়েনের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন ভাঙা এবং মাদক সন্ত্রাস মোকাবিলা—তবে এই পদক্ষেপে ওই অঞ্চলে রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
ডেস্ক রিপোর্ট