ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের আরও একটি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে রাশিয়া, যা যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে। শনিবার (স্থানীয় সময়) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই দাবি জানায় এবং জানায়, ইউক্রেনের সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনাগুলোতে একযোগে হামলা চালিয়েছে মস্কো।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দোনেৎস্কে অগ্রগতি ছাড়াও ইউক্রেনের রেলপথ, সামরিক শিল্প কেন্দ্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ড্রোন প্রশিক্ষণ ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া, ইউক্রেনীয় ১৪০টি ড্রোন, ছয়টি হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র এবং চারটি গাইডেড বোমা ভূপাতিত করার কথাও জানিয়েছে রুশ বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।
অন্যদিকে, ইউক্রেন পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে দাবি করেছে, তারা শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার পর্যন্ত রাশিয়ার ১৩৬টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এছাড়া, রাশিয়ার ওরেনবার্গ অঞ্চলের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে সফল ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলেও জানায় ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
সংঘাত প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ইউক্রেনে টমাহক ক্রুজ মিসাইল সরবরাহ সহজ হবে না এবং কিয়েভকে কিছু ছাড় দিতেও হতে পারে। তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো তার বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষা প্রধান ফিল্ড মার্শাল ডেভিড রিচার্ডস মন্তব্য করেছেন, পশ্চিমা সহায়তা সত্ত্বেও ইউক্রেনের পক্ষে রাশিয়াকে পরাস্ত করা "অসম্ভব"। তার মতে, পশ্চিমারা কেবল লড়াইয়ের জন্য উৎসাহ দিয়েছে, কিন্তু জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দেয়নি। পরিস্থিতি বদলাতে হলে সরাসরি ন্যাটোর হস্তক্ষেপই একমাত্র উপায় বলে মনে করেন তিনি।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই প্রেক্ষাপটে আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ইউরোপে একমাত্র হাঙ্গেরিই যুদ্ধ নয়, বরং শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পুতিন-ট্রাম্প বৈঠক আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি জানান, হাঙ্গেরি সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানে নিরবিচারে সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্বিতীয় বছরে পা রাখলেও সংঘর্ষ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং নতুন নতুন অঞ্চল দখল ও পাল্টা হামলার ঘটনায় উত্তেজনা আরও তীব্র হচ্ছে — যার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে ইউরোপীয় কূটনীতি এবং বিশ্বশান্তি প্রচেষ্টায়।