লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাসিন্দারা। নিয়মিত পৌর কর বাড়লেও নাগরিক সেবায় তেমন কোনো উন্নতি ঘটেনি। সড়কের বেহাল দশা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, সুপেয় পানির সংকট ও জলাবদ্ধতা পৌরবাসীর নিত্য দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
১৯৯৪ সালে ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে রায়পুর পৌরসভা গঠিত হয় এবং ২০০৪ সালে এটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। তবে দুই দশক পেরোলেও প্রত্যাশিত উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বলছেন, নামেই তারা পৌর এলাকায় বসবাস করছেন।
বাসিন্দাদের অভিযোগ ও ভোগান্তি-
পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এ ছাড়া সুপেয় পানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সালমা চৌধুরী বলেন, “পুরো এলাকায় রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা। রাতের বেলায় চলাফেরায় নানা সমস্যায় পড়তে হয়।”
৫নং ওয়ার্ডের আবুল বাসার অভিযোগ, “কর বাড়ছে কিন্তু কোনো নাগরিক সুবিধা পাচ্ছি না। মনে হয় আমরা পৌরসভায় নয়, গৌরসভায় বাস করছি।”
অন্যদিকে ১নং ওয়ার্ডের ফয়েজ আহম্মদ বলেন, “রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ, পানির সংকট—সবকিছু মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছি। বিদ্যুৎবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর এলাকা ভুতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়।”
অটোরিকশা চালকরা জানান, সড়কের গর্তে প্রায়ই যানবাহনের যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। এতে আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তারা।
পৌর কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা
রায়পুর পৌর প্রশাসক মো. ইমরান খান বলেন, “অর্থ সংকটের কারণে নিয়মিত উন্নয়ন কাজ করা যায়নি। তবে কিছু রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে, টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পৌরবাসী উন্নয়নের সুফল পাবেন।”
প্রায় ৫০ হাজার জনসংখ্যার এ পৌরসভায় সড়ক, পানি, ড্রেনেজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুতর সংকট বিরাজ করছে। সচেতন মহলের মতে, দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ না নিলে নাগরিক ভোগান্তি আরও বাড়বে।