দক্ষিণ এশিয়ার কৃষি খাতে জ্ঞান বিনিময় ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার (ইউএএফ)-এ উদ্বোধন করা হয়েছে সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার (এসএসি) বুক কর্নার। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ইউএএফ-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. জুলফিকার আলী আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন।
উপাচার্য ড. জুলফিকার আলী বলেন, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গবেষণা ও জ্ঞান বিনিময় অত্যন্ত জরুরি। তাঁর মতে, এসএসি বুক কর্নার শুধু একটি পাঠাগার নয়, বরং শিক্ষার্থী, গবেষক ও নীতি-নির্ধারকদের জন্য একটি জ্ঞানকেন্দ্র হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কাঠমান্ডুর সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি অ্যান্ড এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া ও সার্ক) মুহাম্মদ আদিল পারভেজ এবং ঢাকা থেকে সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ।
তানভীর আহমেদ তরফদার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি কৃষি হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই খাত কঠিন চাপে রয়েছে। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জ্ঞান বিনিময় অপরিহার্য, আর সার্ক এগ্রিকালচার বুক কর্নার সেই প্রচেষ্টাকে গতিশীল করবে।
মুহাম্মদ আদিল পারভেজ গ্রন্থাগারকে ‘আলোকের উৎস’ আখ্যা দিয়ে বলেন, উন্নয়নের জন্য জ্ঞানের বিকল্প নেই। তাঁর মতে, এই বুক কর্নার কৃষি শিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করবে।
ড. মো. হারুনূর রশীদ জানান, সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কৃষি গবেষণা, নীতি-নির্ধারণ, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ২০০-রও বেশি গবেষণাধর্মী প্রকাশনা প্রকাশ করেছে, যা নিয়মিতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও কৃষি-সংক্রান্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ইউএএফ-এর বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টারের সিনিয়র প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (ক্রপস) ড. সিকান্দার খান তানভীর এবং ইউএএফ লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান উমর ফারুক ও তাঁর টিমকে, যাদের উদ্যোগে এই বুক কর্নার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে।
আয়োজকদের প্রত্যাশা, এসএসি বুক কর্নার ভবিষ্যতে পাকিস্তানসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি জ্ঞান, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন সুযোগ তৈরি করবে।