ইরানি গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী দেশটিতে ইসরায়েলের ‘গুপ্তচর নেটওয়ার্কে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭০০-এর বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ইতোমধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
ইরানের ফার্স সংবাদ সংস্থা ও রাষ্ট্র অধিভুক্ত নুরনিউজ জানিয়েছে, সন্দেহভাজনদের ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইরানের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি গোয়েন্দা অভিযানও চলছিল, যে অভিযানে ইরানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করা হয়েছিল। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বরাবরই ইরান সরকারের পূর্ববর্তী গণগ্রেপ্তারের সমালোচনা করেছে, কারণ এসব ক্ষেত্রে প্রায়ই যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাব দেখা যায়
আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার তাদের বিরুদ্ধে এই সাজা কার্যকর হয়।
ইরানি বিচার ব্যবস্থার ক্রোড়পত্র মিযান বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত ওই ব্যক্তিরা ইরানের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে গোপনে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম চোরাচালানিতে যুক্ত ছিল। ওই কর্মকর্তার নাম বা অন্য কোনো বিস্তারিত তথ্য মিযান প্রকাশ করেনি।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষের আগে বহু বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে জড়িত ছিল ইরান। এ সময় মোসাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা এবং ইরানের অভ্যন্তরে ইসরায়েলি স্বার্থ প্রতিষ্ঠায় জড়িত থাকার দায়ে অসংখ্য মানুষকে প্রাণদণ্ড দিয়েছেন ইরানি আদালত। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে দেশটির পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা থেকে শুরু করে পারমাণবিক কর্মসূচি ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ড। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার সন্দেহে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে ২৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাক সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজের সরকারি কৌঁসুলিরা এই ২৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড’ এবং ‘শত্রুর পক্ষে তথ্য সংগ্রহ ও প্রচার চালানোর’ মতো অভিযোগ এনেছেন। তবে স্বাধীন গণমাধ্যম বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এসব অভিযোগ যাচাই করা সম্ভব হয়নি।