শক্তিশালী ভূমিকম্পে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৬২০’র বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং হাজারের বেশি আহত হয়েছে। রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যা ১১টা ৪৭ মিনিটে ৬.০ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি দেশের কুনার ও নঙ্গরহার প্রদেশে হৃদয় বিদারক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে। ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার, যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক এবং প্রাণহানির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
এসব তুষারপাতপূর্ণ ও পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে দুর্বল নির্মাণ ব্যবস্থা ও দুর্যোগের প্রতি অপর্যাপ্ত প্রস্তুতির মধ্যে বাস করছে। কুনারের নূর গাল, সাওকি, ওয়াতপুর, মানোগি ও চাপাদারা এলাকায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে, যেখানে পল্লীগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি নঙ্গরহার প্রদেশেও হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। উদ্ধার কাজ চলমান থাকলেও প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ এখনও কঠিন হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে জলালাবাদ শহরে এবং আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত কম্পন অনুভূত হয়েছে। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদেও কম্পনের প্রভাব পড়েছে। আফগান ভেতর ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বেপরোয়া নির্মাণ পদ্ধতি এবং ভৌগোলিক কারণে এই ধরনের ভূমিকম্পের প্রভাব মারাত্মক হয়।
আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক মাধ্যমে জানান, স্থানীয় প্রশাসন এবং উদ্ধার দলগুলি তৎপর, এবং কেন্দ্রীয় ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে সহায়তা দল ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলের পথে যাচ্ছে। মূল ভূমিকম্পের পর অন্তত দুইটি বড় আফটারশকও অনুভূত হয়েছে, যার একটি ছিল ৫.২ মাত্রার, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
এই দুর্যোগ আফগানিস্তানের জনগণের জন্য নতুন এক কঠিন পরীক্ষা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাত ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা তাদের জীবন ভেঙে দিয়েছে। জরুরি সহায়তা ও পুনর্গঠনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরো মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।