স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) গভীর রাতে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ‘এক দফা এক দাবি, ক্যাম্পাস আমার অধিকার’—এই স্লোগানে আন্দোলনমুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস এলাকা।
এর আগে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি নোটিশ প্রকাশিত হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে জানানো হয়, অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ চত্বরে জনসমাগম সীমিত রাখতে ১৯৮০ সালের ৪২ নম্বর আইন অনুযায়ী ১৪৪ ধারা কার্যকর হবে। একইসঙ্গে মূল গেট বন্ধ রাখা, যানবাহন প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং প্রয়োজন ছাড়া প্রবেশ সীমিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি না হয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানায়, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ অনুমোদন পেয়েছে প্রশাসন, তবে প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও কয়েক মাস সময় নেবে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালালেও এর কোনো লিখিত চুক্তি নেই। ফলে কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে যেকোনো সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে সরিয়ে দিতে পারে। এ অবস্থায় বিকল্প কোনো অস্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্যোগ না নেওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাফিউল মুজনীবিন জানান, "দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মতামত উপেক্ষা করে আসছে। তাদের দুর্বল অবস্থানের প্রতিক্রিয়াতেই আমরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করছি।"
অন্যদিকে উপাচার্য ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে দ্রুতই ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করা হবে।"