আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাড়ছে আগ্রহ। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা খুঁজতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠককে ঘিরে সারা বিশ্বের নজর এখন অ্যাঙ্কোরেজে। দুই দেশের প্রেসিডেন্টরা স্থানীয় সময় শনিবার সামরিক ঘাঁটি এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসনের একটি কক্ষে মুখোমুখি বসেন, সঙ্গে ছিলেন তাঁদের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টারা। বৈঠকের পর একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা থাকলেও এখনো প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি আসেনি।
আলোচনার শুরুতে দুই নেতা করমর্দন ও সৌজন্য বিনিময় করেন। লাল গালিচা মাড়িয়ে বিমান থেকে নেমে আসা ট্রাম্প ও পুতিন হাসিমুখে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান এবং ছবি তোলেন। কক্ষে প্রবেশের পর তাঁদের পেছনে টানানো ব্যানারে লেখা ছিল—“Pursuing Peace”। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প শুধু সংক্ষেপে বলেন, “ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ”, এরপর সংবাদকর্মীদের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গী ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ। অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্টও দুইজন সহযোগীকে সঙ্গে রেখেছেন। বৈঠকের পর তাঁদের যৌথ মধ্যাহ্নভোজেরও পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে আলোচনার পাশাপাশি আলাস্কার রাস্তায় বিক্ষোভও তীব্র হয়েছে। অ্যাঙ্কোরেজে স্থানীয় বাসিন্দারা ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান তুলেছেন এবং যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত পুতিনকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানোর সমালোচনা করেছেন। এ ছাড়া শান্তি প্রক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে অন্তর্ভুক্ত না করায়ও তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা যায় ইউক্রেনের পতাকা, প্ল্যাকার্ড ও যুদ্ধবিরোধী স্লোগান।
৭৫ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী পাম বারবেউ বলেন, “এটি মূলত ইউক্রেনের যুদ্ধ, তাই যেকোনো আলোচনায় জেলেনস্কির উপস্থিতি অপরিহার্য।” অন্যদিকে প্রবীণ অংশগ্রহণকারী টমাস জানিগলো মন্তব্য করেন, “আমাদের মিত্রদের সমর্থন করা গুরুত্বপূর্ণ, সামরিক আগ্রাসনকে পুরস্কৃত করা উচিত নয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, বৈঠকটি যদিও এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে ইউক্রেন সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় বসা বৈশ্বিক কূটনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে।