জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে, ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভায়— বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাতিলজনিত শূন্য আসন পূরণসহ সকল কোটা, এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার আওতায়, শর্ত সাপেক্ষে পোষ্য ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ক্লাস আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখ থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভায় উপাচার্য, পোষ্য ভর্তির বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মতামত উপস্থাপন করেন। সভায় পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে, বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায়— তাদের দাবির প্রেক্ষিতে, পোষ্য ভর্তির নিয়ম সংস্কারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটি নীতিগতভাবে একমত পোষণ করে।
একইসাথে, পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে পোষ্য ভর্তির বিষয়টি স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে, সকল অংশীজনের সাথে আলোচনাপূর্বক সংশ্লিষ্ট পর্ষদে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে ১ম পর্ব স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরুর প্রাক্কালে, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে “পোষ্য কোটা” ভর্তি পদ্ধতি বাতিল দাবি করে; শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে, এবং আইনগত জটিলতা এড়াতে চলমান ভর্তি পরীক্ষা অধ্যাদেশ, বিবেচনায় নিয়ে পোষ্য ভর্তির ব্যবস্থা বাতিল না করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, উক্ত আপদকালীন সময়ের জন্য পোষ্য ভর্তির বিষয়টি স্থগিত থাকবে বলে ঘোষণা দেয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধাদির সম্ভাব্যতা নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করে।
উল্লেখ্য, উক্ত আপদকালীন সময়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা অধ্যাদেশ সংশোধন করার সময় ছিল না। তবে, পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের অনিয়মের বিষয়ে, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত অভিযোগ পর্যালোচনা করে— শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় নিয়ে পোষ্য ভর্তির নিয়ম সংস্কারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটি নীতিগতভাবে একমত পোষণ করে, এবং ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
১ - বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ঔরসজাত/গর্ভজাত সন্তান পোষ্য হিসেবে ভর্তির সুযোগ পাবে।
২ - প্রতিটি বিভাগে সর্বোচ্চ ৪ জন ভর্তি হতে পারবে। তবে সর্বমোট ৪০ জনের অধিক ভর্তি করা যাবে না।
৩ - চাকরিরত অবস্থায় একজন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কেবল একজন সন্তান, পোষ্য হিসেবে ভর্তির সুযোগ পাবেন।
৪ - পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাশ নম্বর ৪০% (৮০ নম্বরের মধ্যে) থাকতে হবে।
৫ - কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানকে, তার কর্মরত বিভাগে পোষ্য হিসেবে ভর্তি করানো যাবে না।
৬ - পোষ্য ভর্তির ক্ষেত্রে, কোনো অভিভাবকের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হলে— পোষ্যের ছাত্রত্ব বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে অঙ্গিকারনামায় উল্লেখ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৭ - বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত কোনো পোষ্য, কোনোভাবেই আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না এবং কোনো ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।
৮ - পোষ্য ভর্তির বিষয়ে, উপরিউক্ত সিদ্ধান্তসমূহ পরবর্তী শিক্ষাপর্ষদের সভায় রিপোর্ট সাপেক্ষে অনুমোদন ও কার্যকর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে।