ইসরায়েলের মন্ত্রী বেন গভির ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসামের কবর ধ্বংস করার দাবি উত্থাপন করেছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে আরও তীব্র করবার আশঙ্কা তৈরি করেছে। আল-কাসসাম প্যালেস্টাইনের অভ্যুত্থান এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনে একটি প্রতীকী চরিত্র হিসেবে বিবেচিত, যিনি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ও প্রাথমিক ইহুদি জায়নবাদী বসতির বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তার কবর ধ্বংসের দাবি এই ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি সংবেদনশীল বিষয়।
ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ছিলেন একজন রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা যিনি ১৯৩০-এর দশকে প্যালেস্টাইনে ব্রিটিশ শাসন এবং ইহুদি অভিবাসন বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তার কর্মজীবনের শুরুতে ১৯১১ সালে ইতালির লিবিয়া আক্রমণ মোকাবিলায় লিবিয়ার জনগণের প্রতি সহায়তার আহ্বান জানান। পরবর্তী সময়ে ১৯১৯-১৯২০ সালে ফরাসি শাসনের বিরুদ্ধে সিরিয়ার উপকূলীয় বিদ্রোহেও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ফরাসি দ্বারা মৃত্যুদণ্ডের পর ১৯২০ সালে তিনি পরিবারসহ হাইফায় আশ্রয় নেন।
১৯৩৫ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের নজরদারির মধ্যেই তিনি ইহুদি অভিবাসনের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন এবং সঙ্গীসহ ইয়াবাদের কাছে জঙ্গলে প্রত্যন্ত এলাকা চলে যান। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টার ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আল-কাসসাম ও তার চার সঙ্গী নিহত হন। আল-কাসসামের মৃত্যুর পর এই ঘটনা প্যালেস্টাইনের ১৯৩৬-১৯৩৯ সালের মহাবিদ্রোহের সূত্রপাত ঘটায়, যা দীর্ঘদিন ধরে প্যালেস্টাইনের জনগোষ্ঠীর সংগ্রাম ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে থাকে।
বর্তমানে হামাসের সামরিক শাখার নামকরণও আল-কাসসামের নামের প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে করা হয়েছে। ঐতিহাসিক এবং রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে তার কবর ধ্বংসের দাবি মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের পরিবেশে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা ও সমালোচনা সৃষ্টি করতে পারে।