সরকারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত এক বছরে মন্ত্রণালয় পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যাপক কার্যক্রম চালিয়েছে। এর মধ্যে সারা দেশের শপিংমল, কাঁচাবাজার ও কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় পলিথিনবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে এবং পাটের ব্যাগকে সাশ্রয়ী বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বায়ুদূষণ রোধে ‘জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ প্রণয়নসহ অবৈধ ৮৩০টি ইটভাটা ধ্বংস করা হয়েছে। ঢাকার সাভার ও আশুলিয়াকে ‘দূষিত বায়ুমণ্ডল’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলমান। এ ছাড়া, শব্দদূষণ রোধে তরুণদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালু হয়েছে। সীসাযুক্ত অবৈধ কারখানাগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গাজীপুরের গাছা খাল সংলগ্ন ৯টি দূষণকারী কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যকারিতা বাড়াতে ৩৭টি নতুন অফিস ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে এবং পাহাড় সংরক্ষণে ১৬টি জেলার পাহাড় সংক্রান্ত তথ্যকে অনলাইন ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ৩৫১ কোটি টাকার ৪১টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ’ নামে একটি বড় উদ্যোগও চূড়ান্ত হয়েছে, যা দেশের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও গৃহীত হয়েছে একাধিক উদ্যোগ। কক্সবাজার ও সোনাদিয়ায় ১০ হাজার ৩২২ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার এবং বেদখল হওয়া আরও ৫ হাজার ৯৩ একর জমিতে বনায়ন করা হয়েছে। পূর্বাচলে ১৪৪ একর অঞ্চলকে জীববৈচিত্র্য এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা উৎপাদন নিষিদ্ধ করে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের চেষ্টা চলছে। হাতির চলাচলের পথ তৈরি, শেরপুর ও চুনতিতে বন পুনরুদ্ধার প্রকল্পও চলমান।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের অংশ হিসেবে ১৫৯টি ‘এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম’ গঠন করা হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় ময়ূর ফিরিয়ে আনাসহ বিপন্ন প্রজাতির রক্ষা কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। বিভিন্ন অভয়ারণ্য থেকে ৫ হাজার ৬৮৪টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে, জাতীয় উদ্যান ও ইকোপার্কে প্লাস্টিক এবং পিকনিক নিষিদ্ধ করে পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় মনে করছে, এসব পদক্ষেপ শুধু পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে নয়, বরং একটি জলবায়ু প্রতিরোধী, বাসযোগ্য ও টেকসই বাংলাদেশের ভিত্তি রচনায় সহায়ক হবে।