ফেনীতে টানা ভারি বর্ষণ ও ভারতের উজানের ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ১৪টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার অন্তত ৩০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। প্লাবনে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্গতদের আশ্রয়ে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় মোট ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, মুহুরী নদীর পানি মঙ্গলবার রাত ১০টায় বিপৎসীমার ১.৩৭ মিটার ওপরে ১৩.৯২ মিটারে পৌঁছায়, যা মাত্র ১৫ ঘণ্টায় প্রায় ৭ মিটার বা ২২ ফুট ১০ ইঞ্চি বেড়েছে। ফেনীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা চলতি বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ।
বাঁধ ভাঙনের ফলে ফেনীর বিভিন্ন গ্রামে পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থা বহাল থাকবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা পাউবো কর্মকর্তাদের অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন। মির্জানগরের রাঙামাটিয়া এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সময়মতো বল্লামুখা বাঁধ বন্ধ করা হলে এ বিপর্যয় এড়ানো যেত।
ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ফুলগাজীতে ৯৯টি এবং পরশুরামে ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা ছাড়াও সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে (মোবাইল নম্বর: 01818-444500, 01336-586693)। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারতীয় ত্রিপুরায় বর্ষণ অব্যাহত থাকলে নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বাঁধে নতুন ভাঙন দেখা দিতে পারে।