কক্সবাজার বিমানবন্দরকে বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা পর্যটনসহ ব্যবসার সম্ভাবনাকে এক নতুন মাত্রা দেবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর এই প্রথম কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের তালিকায় স্থান পেয়েছে। দীর্ঘতম রানওয়েতে আধুনিক টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন জেলাটি আন্তর্জাতিক পর্যটন ও বানিজ্যের জন্য আরও আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে।
সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘দ্য সিভিল অ্যাভিয়েশন রুল, ১৯৮৪’-এর বিধান অনুযায়ী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানান, রানওয়ের দৈর্ঘ্য বর্তমানে ১০,৭০০ ফুট এবং এর মধ্যে ১,৭০০ ফুট সাগরের উপর নির্মিত। কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সুবিধাসহ সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, তবে প্রথমদিকে যাত্রা ব্যবস্থাপনা পুরনো ভবন থেকেই পরিচালিত হবে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যেও নতুন গতিশীলতা এনে দেবে। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক জয়নাল আবেদীন মনে করেন, বিমান বন্দরের ওপর ভিত্তি করে পুরো এলাকার অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তবে টুর অপারেটরদের দাবী, শুধু বিমানবন্দর নয়, বিদেশি ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা, থাকার ব্যবস্থা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি করতে হবে।
স্থানীয়রা এই আন্তর্জাতিক মর্যাদাকে দীর্ঘদিনের স্বপ্নের বাস্তবায়ন হিসেবে দেখছেন। তারা আশা করেন, কক্সবাজারের সংস্কৃতি ও হস্তশিল্প বিশ্বমঞ্চে বেশ পরিচিতি পাবে। গাড়ি চালক থেকে ব্যবসায়ী সবাই নতুন কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় আগ্রহী।
২০২১ সালে শুরু হওয়া আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারকে একটি পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। রানওয়েকে বর্তমান ৬,৭৭৫ ফুট থেকে ১০,৭০০ ফুটে বাড়ানোর কাজ চলমান, যা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে। এটি শুধু পর্যটন বৃদ্ধিতেই নয়, আঞ্চলিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এখন দেশের নজর অপেক্ষার ওপর, কখন কক্সবাজার থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হবে।