রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ২০২৫-এর সম্ভাব্য ফলাফলের এক জরিপে দেখা গেছে, ভিপি, জিএস ও এজিএস—তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদেই এগিয়ে আছে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’। জরিপে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’।
মঙ্গলবার রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফল প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি সংস্থা ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রিচি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে জানান, ১ হাজার ২৮৪ জন আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীর ওপর এই জরিপ চালানো হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪০.৪ শতাংশ নারী, ১৩.২ শতাংশ ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ২.৩ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে ৭৯.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানিয়েছেন। ছাত্রীদের ক্ষেত্রে এই হার ৬৯.৪ শতাংশ, আর ছাত্রদের মধ্যে ৮৬.৫ শতাংশ। ৮৫.৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হবে।
ভোটের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতা জরিপে স্পষ্ট হয়েছে; ৮২.৩ শতাংশ ভোটার প্যানেলের চাইতে দক্ষ প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ৭৭.৪ শতাংশ বলেছেন, ব্যক্তিগত পরিচয় বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতেই ভোট দেবেন।
ফলাফলে দেখা যায়, ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি পদে ৪৯ শতাংশ, জিএস পদে ৩১.৭ শতাংশ এবং এজিএস পদে ৩৩.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভিপিতে ১০.৩ শতাংশ, জিএসে ২০.১ শতাংশ ও এজিএসে ১২.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ ভিপিতে ২.৩ শতাংশ, জিএসে ২.৬ শতাংশ এবং এজিএসে ৬.১ শতাংশ সমর্থন পেয়েছে। বাকি অংশ বাম সংগঠন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও অন্যান্য দলভুক্ত প্রার্থীদের মধ্যে ভাগ হয়েছে।
তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী এখনো সিদ্ধান্ত নেননি—ভিপিতে ৪৯ শতাংশ, জিএসে ৪১.৭ শতাংশ এবং এজিএসে ৪৪.৫ শতাংশ।
এছাড়া, জরিপে এক প্রার্থীর সঙ্গে সোচ্চারের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও জরিপ পরিচালনাকারীরা জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় সোচ্চারের কোনো সদস্য সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। মোট ৩০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী মাঠপর্যায়ে জরিপ সম্পন্ন করেন, ফলে এর নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহের সুযোগ নেই বলে তারা দাবি করেন।