চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা সভাপতি, সহসভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে অগ্রাধিকারে রয়েছেন—এমন তথ্য যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’- এর জরিপে উঠে এসেছে। সংস্থাটি পরিচালিত এই জরিপে দেখা যায়, চাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের দিকে ঝুঁকেছেন।
বিশদ অংশে দেখা যায়, ৮ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই জরিপে অংশ নিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০৩ জন শিক্ষার্থী, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন-সংক্রান্ত মনোভাবকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪১% নারী, ১৩% অমুসলিম ও ৪% ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী—এটি ভোটারের বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তিকেই নির্দেশ করে। এছাড়া ৪৬% শিক্ষার্থী আবাসিক, ২৯% ক্যাম্পাস সংলগ্ন অনাবাসিক এবং ২৫% শহরে শাটল দূরত্বে বসবাসকারী।
ভোটগ্রহণ সম্পর্কে জরিপে দেখা গেছে, ৮৬.৭% শিক্ষার্থী ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি ৫৯% মনে করেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের প্রভাব চাকসু নির্বাচনে পড়বে। ৮৭% শিক্ষার্থী যোগ্য ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন, অর্থাৎ প্রার্থী নির্বাচনে যোগ্যতাকেই তারা প্রধান্য দিবেন। শিক্ষার্থীদের তালিকায় নেতৃত্বে প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, সততা, ভালো সংগঠক, বক্তৃতার ক্ষমতা, প্রগতিশীলতা, ধর্মীয় অনুশীলন—এ ধরনের গুণাবলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, বিপরীতে মাদকাসক্তি, যৌন কেলেঙ্কারি, ধর্মবিদ্বেষ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী সংশ্লিষ্টতা ভোট না দেওয়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরাই উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন—যেমন, জরিপ অনুযায়ী ছাত্রশিবিরের ইব্রাহিম রনি ২৩.১% ভিপি ভোট পেতে পারেন, জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব ২৭.৬% এবং এজিএস পদে সাজ্জাদ হোসেন মুন্না ১৪.২% ভোট পেতে পারেন। তবে বিরাট অংশ এখনো নিজ পছন্দ চূড়ান্ত করেননি, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে অনিশ্চিত ভোটারের সংখ্যা বেশি—কমবেশি ৭০%।
সংস্থাটি আনডিসাইডেড ভোটারদের ভোট প্রবণতা আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করে বলেছে, অনিশ্চিত ভোটারদের বড় অংশ ছাত্রশিবিরকে ভোট দিতে পারে। জরিপ অনুযায়ী, মোট ভোটের ৫০%-এর বেশি ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী, ৫১% জিএস এবং ৪০% এজিএস পদে ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে. এছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থার স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা, আবাসন-ট্রান্সপোর্ট সমস্যার সমাধান, খাবারের মান বৃদ্ধি, প্রশাসনিক সংস্কার, সেশনজট, শিক্ষকের মূল্যায়নসহ ডিজিটালাইজেশন অন্যতম।