অ্যাপলের সর্বশেষ বহুল প্রতীক্ষিত অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বড় চমক ছিল বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা আইফোন ‘আইফোন এয়ার’। এ নকশার পেছনে যিনি কাজ করেছেন, তিনি লন্ডন-জন্ম নেওয়া তরুণ শিল্পনকশাবিদ আবিদুর চৌধুরী। এবারই প্রথম আইফোনের এমন ভবিষ্যতমুখী নকশার জন্য সরাসরি একজন ডিজাইনারকে সামনে এনেছে অ্যাপল। ভিডিও উপস্থাপনায় আবিদুরের কণ্ঠে শোনা যায়, “আমরা এমন একটি আইফোন বানাতে চেয়েছি, যাকে ভবিষ্যতের অংশ মনে হয়।”
প্রযুক্তি দুনিয়ায় আবিদুর চৌধুরী নতুন মুখ হলেও নকশার জগতে তার অর্জন বহুদিনের। তিনি লাফবারো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রোডাক্ট ডিজাইনে স্নাতক সম্পন্ন করে রেড ডট ডিজাইন পুরস্কার (২০১৬), জেমস ডাইসন ফাউন্ডেশনের বৃত্তি এবং কেনউড যন্ত্রপাতি পুরস্কারসহ একাধিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি ক্যামব্রিজ কনসালট্যান্টস, কারভেন্টা ও লন্ডনের খ্যাতনামা নকশা প্রতিষ্ঠান লেয়ারে কাজ করেন। ২০১৮-১৯ সালে নিজস্ব প্রতিষ্ঠান চালু করে স্টার্টআপ ও উদ্ভাবনী সংস্থার সঙ্গে কাজের মাধ্যমে বহুমাত্রিক নকশাবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ২০১৯ সালে তিনি অ্যাপলে যোগ দেন এবং বড় প্রকল্পের নকশায় যুক্ত হন।
নতুন আইফোন ১৭ সিরিজে (আইফোন ১৭, ১৭ প্রো, ১৭ প্রো ম্যাক্স এবং ১৭ এয়ার) সবচেয়ে আলোচিত পণ্যটি হলো ‘আইফোন এয়ার’। মাত্র ৫.৬ মিলিমিটার পুরুত্ব ও ১৬৫ গ্রাম ওজনের এই ফোনটি ৮০ শতাংশ পুনর্ব্যবহৃত টাইটেনিয়ামে তৈরি। এতে রয়েছে ৬.৫ ইঞ্চি সুপার রেটিনা এক্সডিআর ডিসপ্লে (১২০ হার্জ), প্রো-সেরামিক শিল্ড উভয় পাশে, ৩১৪৯ এমএএইচ ব্যাটারি, ৪৮ মেগাপিক্সেল ফিউশন ব্যাক ক্যামেরা ও ১৮ মেগাপিক্সেল সেন্টার স্টেজ ফ্রন্ট ক্যামেরা। আইওএস ২৬-এর অ্যাডাপটিভ পাওয়ার ফিচার, এন১ ওয়ারলেস চিপ ও উন্নত এআই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে অ্যাপল দাবি করছে, ব্যাটারি খরচ কম এবং ম্যাকবুক প্রো-স্তরের পারফরম্যান্স মিলবে। ফোনটি শুধুমাত্র ই-সিম সমর্থিত।
আইফোন এয়ার শুধু একটি নতুন মডেল নয়; এটি প্রমাণ করে, সৃজনশীলতার মাধ্যমে প্রযুক্তিকে নতুন মাত্রা দেওয়া যায়। আর এ যাত্রার কেন্দ্রেই আছেন আবিদুর চৌধুরী—যিনি বিশ্বমানের উদ্ভাবনী নকশার এক নতুন প্রতীক হয়ে উঠেছেন।