নেপালে সহিংস বিক্ষোভে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগের পর মঙ্গলবার রাত থেকে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বিক্ষোভকারীরা সরকারি দপ্তর, পার্লামেন্ট ভবন ও শীর্ষ নেতাদের বাসভবনে হামলা চালালে অন্তত ১৯ জন নিহত হন।
দিনভর বিক্ষোভে উত্তেজিত জনতা সুপ্রিম কোর্ট, সিংহদরবার প্রাঙ্গণ ও বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দিউবা ও তার স্ত্রী হামলায় আহত হন, সেনাবাহিনী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। অপরদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঝালনাথ খানালের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তার স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকর দগ্ধ হয়ে মারা যান।
রাজনৈতিকভাবে অশান্ত এই পরিস্থিতির সূত্রপাত হয় ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদ থেকে। পরবর্তীতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও সরকারব্যবস্থার দুর্বলতা, দুর্নীতি এবং প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগে আন্দোলন আরও বেগবান হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সড়কে নেমে স্লোগান তোলে—সরকার যেন আর ‘ছাত্র হত্যার’ মতো ঘটনাকে সমর্থন না করে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
৭৩ বছর বয়সে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান কেপি শর্মা অলি। প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেলের কাছে পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, “অসাধারণ পরিস্থিতির কারণে” আর প্রধানমন্ত্রীত্ব চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এদিকে, সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সেনাবাহিনীও এক বিবৃতিতে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের উপর গুরুত্বারোপ করেছে।
বর্তমানে নেপালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সামরিক বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা অবস্থায় সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো। অস্থিতিশীল এই পরিস্থিতি থেকে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নেপাল সরকারের জন্য বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।