মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় আট মাসে টানা অভিযানের পরও পদ্মা নদীতে কারেন্ট জাল ও চায়না দুয়ারির ব্যবহার পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি। উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৯১টি অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। তবুও জালের সহজলভ্যতা ও স্থানীয় বাজারে অবাধ বিক্রির কারণে এ প্রবণতা থামছে না।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম জানান, এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৪৯ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং দুই হাজারের বেশি চায়না দুয়ারি জব্দ করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলায়নি। সর্বশেষ ২৯ আগস্ট উপজেলার নাগেরহাট বিলে অভিযান চালিয়ে ভেসাল জাল ও নিষিদ্ধ দুয়ারি ধ্বংস করা হয়। একই দিন কোস্ট গার্ড পদ্মা নদী থেকে আরও ২০ হাজার মিটার জাল জব্দ করে।
কোস্ট গার্ড কর্মকর্তারা দাবি করছেন, নিয়মিত অভিযানের ফলে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। তবে তারা মনে করেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টায় এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়; স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নৌ পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, মূল সমস্যা হলো নিষিদ্ধ জালের সহজলভ্যতা। লৌহজংয়ের আশপাশে অবৈধ কারখানায় এসব জাল তৈরি হয় এবং স্থানীয় হাটবাজারে সহজেই বিক্রি হয়।
পদ্মার তীরবর্তী জেলেরা জানিয়েছেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি গোপনে চায়না দুয়ারি ব্যবহার করে, যা মাছের পোনা পর্যন্ত নিধন করছে। স্থানীয় হাটে প্রশাসনের উপস্থিতি না থাকলে অবাধে এসব জালের কেনাবেচা চলে। স্থানীয় নাগরিক সমাজও সতর্ক করেছে যে, এভাবে চলতে থাকলে লৌহজংয়ের মৎস্য সম্পদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের মতে, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়ানোই সবচেয়ে জরুরি।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অভিযান চললেও বন্ধ হচ্ছে না পদ্মায় নিষিদ্ধ জালের দাপট
- আপলোড সময় : ০৩-০৯-২০২৫ ০৮:৪৭:০৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৩-০৯-২০২৫ ০৮:৪৭:০৫ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ