তিনি জানান, এই সংলাপ মূলত নিউইয়র্ক সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক ধাপ হিসেবে কাজ করছে। এর বিশেষ গুরুত্ব হলো— রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, যেখানে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা, প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করার সুযোগ পাচ্ছেন। এসব মতামত উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় প্রতিফলিত হবে।
রোববার কক্সবাজারে আয়োজিত আলোচনার ফাঁকে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সংলাপটি চারটি মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে— মানবিক সহায়তা ও তহবিল সংকট, রাখাইন রাজ্যে আস্থা তৈরির পদক্ষেপ ও প্রত্যাবাসন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা, এবং টেকসই সমাধানের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল। আলোচনার সারসংক্ষেপ ও সুপারিশ সম্বলিত একটি চেয়ার’স সামারি তৈরি করা হবে, যা নিউইয়র্ক সম্মেলনের প্রধান রেফারেন্স ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
মানবিক সহায়তার ঘাটতির প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, সহায়তা কমে গেলে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে। তাই বিদ্যমান সহায়তাকারীদের পাশাপাশি নতুন উৎস থেকেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যাবাসন বিষয়ে সিয়াম বলেন, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ সক্রিয় থাকলেও এ প্রক্রিয়া শুধু বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল নয়; মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও আস্থার পরিবেশও সমানভাবে জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন বৈশ্বিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে, তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য।
সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সোমবার করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক সমন্বিত উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়াচে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ ও রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা। সেই থেকে সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ।