দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে দোয়া মাহফিল; যেখানে শীর্ষ নেতাগণের অনুপস্থিতিকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশের তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের উদ্যোগে, ১৫ আগস্ট,২০২৫ তারিখ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্দিষ্ট স্থানে আয়োজিত ও পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচিতে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নিলেও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, এবং একাধিক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতি অনুষ্ঠানের আয়োজন ও সফলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। উপস্থিত এবং অনুপস্থিতদের এই বৈপরীত্যকে ঘিরে সংগঠনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরবর্তীতে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্রের সংকট এবং বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ত্যাগের কথা তুলে ধরা হয়। বক্তারা তাঁর রোগমুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা বলেন, দেশনেত্রী শুধু বিএনপির নয়, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনন্য প্রতীক। তারা আরও উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রতিকূলতা, কারাবাস ও শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও বেগম খালেদা জিয়া দেশের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
তবে, শাখা ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বের অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক উপস্থিত নেতাকর্মীরা। তাঁদের মতে, এমন একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিনে শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি সংগঠনের ভেতরের ঐক্য ও কার্যক্রমের প্রতি নেতিবাচক বার্তা দিতে পারে। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, এই অনুপস্থিতি সাংগঠনিক দ্বন্দ্বের প্রতিফলন, যা ভবিষ্যতে কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে ছাত্রদল দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় এবং বিভিন্ন জাতীয় কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ করে কেন্দ্র থেকে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে, শাখা ছাত্রদলের উপস্থিতি সবসময়ই নজরকাড়া ছিল। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়হীনতা ও নেতৃত্বের বিরোধের অভিযোগ একাধিকবার সামনে এসেছে, যা এই দিনের ঘটনায় নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের একাধিক অংশগ্রহণকারী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই দোয়া মাহফিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দলের প্রতি আনুগত্য, নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা এবং রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রকাশ। তাই, এখানে শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি, কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং সাংগঠনিক দায়িত্বের প্রশ্নও তুলে দেয়।
উপস্থিত নেতাকর্মীদের মতে, ছাত্র সংগঠনের ঐক্য ও মনোবল বজায় রাখতে এই ধরনের তাৎপর্যপূর্ণ দিবসে, নেতৃত্বের সক্রিয় উপস্থিতি জরুরি। কারণ নেতৃত্বের অনুপস্থিতি কেবল মুহূর্তের জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে কর্মীদের উদ্দীপনা ও আস্থা কমিয়ে দিতে পারে।
দোয়া মাহফিল শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সুস্থতা, দীর্ঘায়ু এবং দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি তাঁরা শপথ নেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামে সক্রিয় থাকার।