শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি লিখিত ব্যাখ্যায় বিজিবি জানায়, প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালের ১৯ জুলাইয়ের সহিংসতার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ করা হলেও এতে বাহিনীটিকে একতরফাভাবে দোষারোপ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ব্যবহার করা ফুটেজ ও বর্ণনাকে বিজিবি ‘মনগড়া’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উল্লেখ করেছে।
প্রতিবেদনে যুক্ত করা টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের ফরেনসিক বিশ্লেষণেও যে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন, তার পরিপূর্ণ বিবরণ নেই বলেও অভিযোগ করেছে বিজিবি। তাদের দাবি, ভিডিওতে উল্লেখিত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা গুলি ছুড়েছেন, তারা ঠিক কোন বাহিনীর সদস্য—সে বিষয়ে স্পষ্টতা নেই।
বিজিবি আরও জানায়, ওইদিন রামপুরায় শুধু তারাই নয়, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরাও অভিযানে অংশ নেন। কিন্তু প্রতিবেদনে কেবল বিজিবিকে দায়ী করাটা প্রমাণ করে, এটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে নির্মিত একটি পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন।
লিখিত ব্যাখ্যায় বিজিবি উল্লেখ করে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারিভাবে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। প্রতিবেদনে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতির দাবি অপ্রমাণিত ও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে জানায় বাহিনীটি।
প্রতিবেদনের আরেকটি অংশে ৯৭২ রাউন্ড গুলি ছোড়ার দাবি করা হলেও বিজিবির ভাষ্য অনুযায়ী, এর বেশিরভাগই ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত যানবাহনের গোলাবারুদ ও ফাঁকা গুলি। তারা দাবি করে, কোনো এলএমজি বা ভারি অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ নেই এবং মাঠপর্যায়ে তাদের কোনও ‘র্যাপিড অ্যাকশন টিম’ও মোতায়েন করা হয়নি।
বিজিবি আরও বলেছে, যে ভিডিও ফুটেজে গুলির শব্দ শোনা যায়, তা এডিটকৃত এবং বাস্তব ঘটনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এমনকি, জনসমর্থনের প্রমাণ হিসেবে তারা বিভিন্ন এলাকার ফুটেজের উল্লেখ করে, যেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিজিবির সহযোগিতামূলক আচরণ দেখা গেছে।
তারা আরও দাবি করে, বাহিনীটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত ইতিমধ্যে শেষ করেছে এবং আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে তদন্তের নামে ভুল তথ্য বা নির্বাচিত ফুটেজ উপস্থাপনকে তারা ন্যায়বিচারের পথে অন্তরায় হিসেবে দেখছে।
বিজিবির মতে, এমন সময়ে যখন বাহিনীটি সীমান্ত সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক আইন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তখন একটি মনোবলহীন প্রতিবেদন ভবিষ্যতে বাহিনীর কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। তারা প্রশ্ন তোলে—দেশীয় স্বার্থের বাইরে এ ধরনের প্রতিবেদন তৈরির পেছনে বিদেশি ইন্ধন আছে কি না।
বাহিনীটি মনে করে, যদি কোনো সদস্য বিচারের মাধ্যমে দোষী প্রমাণিত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে—তবে তাতে যেন বিভ্রান্তিকর উপস্থাপন প্রভাব না ফেলে।