বাংলাদেশকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির ষষ্ঠ কিস্তি দিতে আপাতত রাজি নয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন শেষে যে নতুন রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা ঋণের শর্তগুলো মেনে চলবে কি না— এ বিষয়ে অনিশ্চয়তার কারণেই সংস্থাটি এখনই অর্থ ছাড়ে সম্মতি দিচ্ছে না।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এ বার্তা জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
ডলার সংকট মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সরকার ২০২২ সালের শেষে আইএমএফ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি যোগ করে মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলার। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পাঁচ কিস্তিতে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের কথা ছিল, যার পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি। এরপর সপ্তম কিস্তি ছাড় নির্ধারিত রয়েছে আগামী জুনে।
আইএমএফ নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে তাদের একটি মিশন বাংলাদেশে এসে দুই সপ্তাহ ধরে শর্তপূরণ যাচাই করে। ষষ্ঠ কিস্তির রিভিউ মিশন আসছে ২৯ অক্টোবর। পরবর্তীতে ওয়াশিংটন সদর দপ্তরে প্রতিবেদন জমা দিলে তহবিলের বোর্ড চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফের দেওয়া অধিকাংশ শর্ত বাংলাদেশ পূরণ করেছে, শুধুমাত্র রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবুও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে আইএমএফ ডিসেম্বরের পরিবর্তে মার্চ বা এপ্রিল নাগাদ অর্থ ছাড় করতে পারে বলে ধারণা করছেন নীতি-নির্ধারকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আমরা সব শর্ত পূরণ করলেও কিস্তির অর্থ কিছুটা দেরিতে পেতে পারি। কারণ, নির্বাচনের পর নতুন সরকার আইএমএফের নীতিমালা অনুসরণ করবে কি না, তারা সেটি নিশ্চিত হতে চাইছে।”
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, এই বিলম্বে অর্থনীতিতে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে, আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২১৪ কোটি ডলারে।
ডেস্ক রিপোর্ট