আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর ১৯টি সীমান্ত পোস্ট নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। শনিবার (১১ অক্টোবর) রাতভর চলা এই সংঘর্ষে আফগান সেনাদের প্রাণহানি ও পিছু হটার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সেনা সূত্র। তবে আফগান কর্তৃপক্ষ এ দাবির বিরোধিতা করেছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানায়, ডুরান মেলা, তুর্কমানজাই, শহিদান, কুনার ও চাগাইসহ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয় তীব্র গোলাগুলি চলে। পাকিস্তান সেনাদের আক্রমণে আফগান বাহিনীর সদস্যরা পোস্ট ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। সংঘর্ষে কয়েক ডজন আফগান সেনা নিহত ও আহত হয়েছেন বলেও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অন্যদিকে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আফগান তালেবান বাহিনীর সঙ্গে সীমান্তজুড়ে শনিবার রাতভর ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বলেন, আফগান বাহিনীর ‘উসকানিমূলক’ হামলার জবাবে পাকিস্তান সেনারা ‘শক্ত প্রতিক্রিয়া’ দিয়েছে। নিরাপত্তা সূত্রের বরাতে আরও জানানো হয়, পাকিস্তানি বাহিনী আন্তর্জাতিক সীমান্তে আফগান পোস্টগুলোতে আর্টিলারি, ট্যাংক, ও ড্রোনসহ ভারি অস্ত্র ব্যবহার করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
আফগান পক্ষের অভিযোগ, গত সপ্তাহে পাকিস্তান আফগান রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ হিসেবেই সীমান্তে এই সংঘর্ষ শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছে তালেবান নেতৃত্বাধীন সরকার। তারা জানিয়েছে, কুনার, নানগারহার, পাকতিকা, খোস্ত ও হেলমান্দ প্রদেশে লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
তবে পাকিস্তান বিমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, আফগান মাটিতে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। পাকিস্তানি সেনারা জানিয়েছে, ‘একাধিক আফগান সেনা নিহত হয়েছে এবং তালেবান যোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।’ তারা আরও দাবি করেছে, আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত দায়েশ ও খারেজি গোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলোতে ট্যাংক, আর্টিলারি, ড্রোন ও বিমান ব্যবহার করে হামলা চালানো হচ্ছে।
সীমান্তের উত্তেজনা বাড়ায় কাতার, ইরান ও সৌদি আরব উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।