রয়টার্সের ছয়টি সূত্রের বরাতে জানা যায়, ‘এনটিটি স্যাংশন’ নামে পরিচিত এই প্রাতিষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হতে পারে। এই নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-ভিত্তিক আইসিসি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই জরুরি অভ্যন্তরীণ বৈঠক করেছে এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পুরো আদালতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্রের অভিযোগ, আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নাগরিকদের ওপর ‘অযৌক্তিক এখতিয়ার’ দেখাচ্ছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি আইসিসি তাদের কাঠামোতে পরিবর্তন না আনে, তাহলে ওয়াশিংটন তাদের সামরিক সদস্য ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
যদি এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, তাহলে আইসিসির কর্মীদের বেতন প্রদান, ব্যাংকিং পরিষেবা এবং সফটওয়্যার ব্যবহারসহ সব ধরনের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। এমন পরিস্থিতির আশঙ্কায় আইসিসি ইতোমধ্যে তাদের কর্মীদের ২০২৫ সালের বাকি মাসের বেতন অগ্রিম পরিশোধ করেছে। এছাড়া, আদালত বিকল্প ব্যাংকিং এবং সফটওয়্যার সরবরাহকারীর সন্ধান করছে বলে তিনটি সূত্র জানিয়েছে।
প্রাসঙ্গিক তথ্য হিসেবে উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধের বিচার করার জন্য ২০০২ সালে আইসিসি গঠিত হয়। এটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকদের বা তাদের ভূখণ্ডে সংঘটিত অপরাধের বিচার করতে পারে। বর্তমানে আইসিসির ১২৫টি সদস্য রাষ্ট্র থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ইসরায়েলের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো এর সদস্য নয়। আইসিসির হাতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ক্ষমতা থাকলেও, কোনো অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য এটি সদস্য দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল। ২০২৪ সালের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আইসিসির বিচারকরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।