জেরুজালেম গভর্নরেট জানিয়েছে, ইসরায়েল দখল করা পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের নিচে অবৈধভাবে খনন কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ইসলামী ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো ধ্বংস করছে। এই বিষয়ে ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী এই স্পর্শকাতর এলাকায় গোপনে খনন করছেন। গভর্নরেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘উমায়্যাদ যুগের ইসলামী নিদর্শনগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে, যা মুসলমানদের এই পবিত্র স্থানের বৈধ মালিকানা প্রমাণ করে।’
এই অবৈধ খনন কার্যক্রমের মাধ্যমে ইসরায়েল আল-আকসার ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে ফেলতে এবং ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে পরিচিত এই এলাকায় তাদের দাবি প্রতিষ্ঠায় তথ্য বিকৃতির চেষ্টা করছে। জেরুজালেম গভর্নরেট জানিয়েছে, এ ধরনের কাজ গোপনে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের বাইরে করা হচ্ছে, যা মসজিদের ভিত্তি ও ঐতিহাসিক নিদর্শনের জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করছে।
তবে গভর্নরেট স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাদের অভিযোগ অনুসারে এই খনন কার্যক্রম জেরুজালেম শহরকে ইহুদিবাদী করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। যদিও সুনির্দিষ্ট স্থান উল্লেখ করা হয়নি, প্যালেস্টিনিয়ানরা বলছে, তেলআবিব দশকের বেশি সময় ধরে আল-আকসার নিচে সুড়ঙ্গ খনন করছে।
আল-আকসা মসজিদ বিশ্বের মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এবং সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে, এই মসজিদের কার্যক্রম পরিচালনার অধিকার জোরদার হয়েছে জর্ডান পরিচালিত জেরুজালেম এন্ডাউমেন্ট কাউন্সিলের হাতে। ২০১৩ সালে জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ দ্বিতীয় এবং প্যালেস্টিনিয়ান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা জর্ডানকে এই পবিত্র স্থানের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রদান করে।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম অধিকার করে এবং ১৯৮০ সালে পুরো শহরটির সংযুক্তি ঘোষণা করে, যা আজও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেয়নি।
এই ঘটনার পটভূমিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ ও ইউনেস্কোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই অবৈধ খনন কার্যক্রম বন্ধ করে এবং ইসরায়েলকে দায়বদ্ধ করে। এই ধ্বংসযজ্ঞ ইতিহাস ও মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে চালানো একটি গুরুতর অপরাধ বলে গভর্নরেট মন্তব্য করেছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, ওয়াফা নিউজ, আইকিউএনএ