পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৭ জনে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে গত ৪৮ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৭৯ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী ও ১৩ শিশু রয়েছে।
জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, শুধু বুনের জেলাতেই মারা গেছে অন্তত ১৮৪ জন। বাজাউর, টরগার, মানসেরা ও শাংলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় ৭৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ১১টি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। পিডিএমএ আশঙ্কা করছে, বৃষ্টিপাত অন্তত ২১ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। প্রাদেশিক সরকার বুনের ও স্বাতসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ‘দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলার জন্য ৫০০ মিলিয়ন রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ উদ্ধার ও দুর্গতদের সরিয়ে নিতে কাজ করছেন। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধারকর্মীরা পায়ে হেঁটে এবং নৌকা ব্যবহার করে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দ্রুত ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। সেনাবাহিনী দুর্গতদের জন্য এক দিনের বেশি খাদ্য (৬০০ টনেরও বেশি রেশন) সরবরাহ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত সেতু মেরামতে কাজ শুরু করেছে। খাইবার পাখতুনখাওয়া সরকারের তথ্য উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফ জানিয়েছেন, প্রদেশের ১১টি জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৩ হাজার ৮১৭ মানুষ বন্যাকবলিত এবং এখনও ৩২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। উদ্ধারকাজে ৫৪৫ জন কর্মী ও ৯০টি যানবাহন ও নৌকা অংশ নিয়েছে।
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য এলাকাও ক্ষতির মুখে পড়েছে। আজাদ কাশ্মীরে অন্তত ১১ জন এবং গিলগিট-বালতিস্তানে ১২ জন মারা গেছেন। শুধু আজাদ কাশ্মীরেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪১৭টি বাড়ি, যার মধ্যে ১০৪টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। নিলাম ভ্যালি, ঝিলাম ও ভাগ জেলা থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।