দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণ সংগ্রহের সময় বাক্সের আঘাতে এক ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় স্থানীয় শিশু সাইদ আবু ইউনিস প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিমান থেকে ফেলা সাহায্যের বাক্স সরাসরি তার মাথায় পড়ে গুরুতর আহত করে। দ্রুত নাসের হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ধরনের দুর্ঘটনা গাজায় প্রথম নয়। কয়েক দিন আগে একইভাবে এক নার্স নিহত হন ত্রাণের বাক্সের আঘাতে। ২০২৪ সালের অক্টোবরেও আল-মাওয়াসি এলাকায় প্যারাসুটে ঝুলন্ত ত্রাণ একটি তাঁবুর ওপর পড়ে তিন বছরের সামি মাহমুদ আইয়াদের মৃত্যু ঘটায়। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো এই ধরনের আকাশপথে ত্রাণ পাঠানোর কৌশলকে অদক্ষ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, এভাবে খাদ্য ও জরুরি সহায়তা কার্যকরভাবে বিতরণ সম্ভব নয়। সংগৃহীত ছবি
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন বলেছেন, ইসরাইলি অবরোধ এবং মারাত্মক খাদ্য সংকটের মধ্যে শুধু আকাশপথে ত্রাণ ফেলা দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ তিনি লিখেছেন, বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ মানুষ অনাহারে আছে, এবং স্থলপথই খাদ্য পৌঁছানোর একমাত্র কার্যকর উপায়।
গাজা-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ও মানবিক সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) অভিযোগ করেছে, ত্রাণ বিতরণের সময় ভিড়, লুটপাট এবং সহিংসতা প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। জুন ও জুলাই মাসে আল-আত্তার ও আল-মাওয়াসি এলাকায় অবস্থিত দুটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ত্রাণ আনতে গিয়ে ১,৩৮০ জন আহত ও ২৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খাদ্য সংকটে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ জন শিশু। বৃহস্পতিবার ‘ক্ষুধা ও অপুষ্টি’জনিত কারণে আরও চারজন মারা গেছেন, এর মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে গাজায় তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারে পৌঁছেছে, যা এক মাসে সর্বোচ্চ।