বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের চিন্তা ও চেতনার প্রতিফলন দেখা গেছে। তিনি বলেন, জাতি জুলাই বিপ্লবের অপেক্ষায় ছিল, এটি ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলেও, এতে শহীদ, আহত, শিক্ষক, বিচারপতি হত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরের মতো ঘটনাগুলো উপেক্ষিত থাকায় ঘোষণাপত্রটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন। সভার শিরোনাম ছিল ‘ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ছাত্র-শিক্ষক-জনতার অবদান ও করণীয়’।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থিদের অবদান যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি। এর ফলে এটি নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম দিতে পারে।” তিনি দাবি করেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ‘জুলাই সনদ’-এর আইনি ভিত্তি তৈরি করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তা না হলে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি ড. এম কোরবান আলী এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ফজলুল করীম। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, যিনি বলেন, “যাদের কারণে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল—সেই শ্রমিক, মজুর ও শিক্ষকরা ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত। এটি সংশোধন করা সময়ের দাবি।”
বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াত ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতারা, যারা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে শিক্ষকেরা ক্লাসরুম ছেড়ে রাজপথে আন্দোলন করছেন। সরকারের কাছে দাবি জানান—শিক্ষকদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভায় অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, নতুন প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। বক্তাদের মতে, অন্তঃসারশূন্য ঘোষণাপত্র পরিবর্তন না হলে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না এবং ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে।