রাজশাহীতে সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে জেলার তানোর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক ঘটনার পর সাধারণ মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। পুলিশের বাড়তি টহল সত্ত্বেও পথচারী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ নাগরিকরা নিয়মিতভাবে অপরাধীদের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন।
গত ১৫ অক্টোবর রাতে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিকাশ এজেন্ট নাসির উদ্দীন মুখোশধারী ছিনতাইকারীদের হাতে আক্রান্ত হন। তারা তার কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত নাসিরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং এখনও সুস্থ হতে পারেননি।
নাসিরের ভাই তাছির আহমেদ জানান, দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বা টাকাও উদ্ধার হয়নি। এতে এলাকায় ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনার ১০ দিন পর, ২৫ অক্টোবর রাতে একই উপজেলার চৌবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী ফটিক হাসানের বাড়িতে তিনজন ডাকাত প্রবেশ করে। তারা পরিবারকে জিম্মি করে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী জেলায় ৭টি ছিনতাই ও ৭টি ডাকাতির মামলা রেকর্ড হয়েছে, যেখানে মোট ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীতেও একই সময়ে ২১টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫৫ জনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর পুলিশ (আরএমপি)। জেলা পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন অপরাধীকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধ দমনে রাতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যকর করা জরুরি। রাজশাহীর নাগরিকরাও আশা করছেন, দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পুলিশ প্রশাসন শহরটিকে পুনরায় নিরাপদ নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
ডেস্ক রিপোর্ট