বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এক শিক্ষার্থীর নারীবিদ্বেষী ও ধর্মনিন্দাসূচক বক্তব্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে। গত পাঁচ মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুসলিম মেয়েদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এবং ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে বুয়েট প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তের উদ্যোগ নিলেও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের পদক্ষেপে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও তাকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে ‘নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ’ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, ডিন অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার (ডিএসডব্লিউ) অফিস ঘেরাও করে রাখা শিক্ষার্থীরা দাবি জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা এবং তার ডিজিটাল ডিভাইস ফরেনসিক পরীক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিবাদে গত দুই দিন ধরে ক্যাম্পাসে টানা কর্মসূচি চলছে। একাধিক বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবাদে অংশ নেওয়া এক ছাত্রী বলেন, “এটি শুধু বুয়েটের নয়, নারীর মর্যাদা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রশ্ন। তাই আমরা ন্যায্য বিচার চাই।”
অন্যদিকে, প্রশাসন জানিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনো প্রমাণিত নয়; আইনি প্রক্রিয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রমাণ প্রয়োজন। তবে শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই বিলম্বই দোষীর জন্য নিরাপদ আশ্রয় তৈরি করছে। পুলিশের তরফ থেকেও প্রমাণ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে পুরো বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে। অনেকেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেছেন।
ঘটনার জের ধরে গতকাল রাত থেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, যদি প্রশাসন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে তারা দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেবেন।
ডেস্ক রিপোর্ট