গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় একটি মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে গুম করার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দেশজুড়ে উগ্র সংগঠন ইসকনের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনের মুখপাত্র মাওলানা মাহবুবুর রহমান মিয়াজি বৃহস্পতিবার এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানান। হেফাজতের শীর্ষ নেতারা ইসকনকে ভারতের এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে তাদের উপর দেশজুড়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন।
হেফাজতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজীপুরের টঙ্গী মরকুন এলাকার বিটিসিএল টিএন্ডটি কলোনি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিবুল্লাহ মিয়াজীকে সপ্তাহখানেক আগে গুম করা হয়েছে। মসজিদে জুমার খুতবার সময় তিনি সত্য কথা বলায় ইসকন সন্ত্রাসীরা তাকে পর্যায়ক্রমে ১২টি হুমকিপূর্ণ চিঠি প্রেরণ করেছিল। অবশেষে সীমান্তবর্তী পঞ্চগড়ে হাত-পা বাঁধা ও অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়া গেছে। হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি তুলেছেন।
তাদের মতে, ইসকন বাংলাদেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তি হিসেবে কাজ করছে এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নানা অন্তর্ঘাতমূলক কার্যক্রম চালায়। গত বছরের নভেম্বরে অর্থপাচারের অভিযোগে ইসকনের ১৭ সদস্যের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছিল। এ সংগঠন দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির নামে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসন, গোয়েন্দা ও আমলা বাহিনীর কিছু অংশকে নিজেদের ম্যানেজ করছে।
হেফাজত নেতারা আরও বলেন, শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নকারী এবং মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত বছর গ্রেফতারের পর ইসকন অনুসারীরা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতা চালিয়ে একজন আইনজীবীকে হত্যা করেছে। এ ঘটনার পরও তারা দেশের মুসলমানদের ধৈর্যকে দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করছে, যা আজকের ইমাম গুমের মূলে রয়েছে।
তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য মুসলিম ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসকনের উগ্রতাবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান জানিয়েছে। বর্তমান সময়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এ ধরনের উগ্রতা এবং পারস্পরিক হিংসা বন্ধ করতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসকনের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক ও প্রতিশোধমূলক কর্মসূচি ত্বরান্বিত হয়েছে, যা জাতীয় সংহতির জন্য উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে স্বচ্ছ ও দৃষ্টান্তমূলক তদন্ত এবং কঠোর বিচার মালুম হওয়া জরুরি বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
ডেস্ক রিপোর্ট