জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইনকে ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যা’ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।
ভিসি জানান, এ ধরনের নৃশংস ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এদিকে জুবায়েদের সহকর্মী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা দাবি করছেন, হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়িত। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, যারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে, তারাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। একইসঙ্গে, জুবায়েদ যেই বাসায় টিউশনি করতে যেতেন, সেই পরিবারের সদস্যদেরও সন্দেহের তালিকায় এনেছেন তিনি। তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় এ ঘটনাকে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতার অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশজুড়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে। তিনি দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে সতর্ক করে বলেন, দাবি বাস্তবায়িত না হলে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে।
রোববার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির একটি বাড়ির সিঁড়ি থেকে জুবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, জুবায়েদ যে বাসায় টিউশনি করাতে যেতেন, সেখানেই এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজনৈতিক সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এই হত্যাকাণ্ড গভীর শোক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।